কামাল কাদীর (জন্ম: ৪ মার্চ ১৯৭১) একজন বাংলাদেশী-মার্কিন শিল্পোদ্যোক্তা। তিনি বাংলাদেশে প্রথম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সেলবাজার এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। ২০০৯ সালে টেড তাকে টেড ফেলো হিসেবে মনোনীত করে এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে ইয়ং গ্লোবাল লিডার হিসেবে ঘোষণা করে।
কামাল কাদীরের জন্ম ১৯৭১ সালের ৪ মার্চ যশোরে। তার বাবা যশোরের একজন আইনজীবী ছিলেন। দশ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। ১৯৭১ সালের মার্চে যুদ্ধ শুরু হলে পুরো পরিবার গ্রামের বাড়ি নড়াইলে চলে যায়। দেশ স্বাধীন হলে আবার যশোরে ফিরে আসে। যুদ্ধে তাদের বাড়ি লুটপাট হওয়ায় নতুন করে জীবন শুরু করতে হয়। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে বাবা দুর্ঘটনায় মারা গেলে পুরো পরিবারে বড় ধাক্কা লাগে। এরপর মা দশ ভাইবোনকে মানুষ করেছেন। মাধ্যমিক পাস করার পরে কামাল কাদীর বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান যুক্তরাষ্ট্রে।
তিনি ওবেরলিন কলেজ থেকে বিএ এবং এমআইটি স্লোন স্কুল অব ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইনসাইট ভেঞ্চার পার্টনারসে শিক্ষানবিস হিসাবে কাজ করেছেন, অ্যাক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম এর বাংলাদেশে ব্যবসা উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ করেছেন এবং নিউইয়র্ক সিটি চেম্বার অফ কমার্সের হয়েও কাজ করেছেন।
বাংলাদেশে ই-কমার্সের সাথে তিনি সেলবাজার.কম দিয়ে পরিচিত করান। ৪০ লাখ গ্রাহক হওয়ার পর এটি টেলিনর কোম্পানির গ্রামীণফোন কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে এটি এখানেই.কম নামে পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে কাদীর বিকাশ, মোবাইল ফোন ভিত্তিক অর্থ আদান প্রদানের একটি সার্ভিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি ওপেন ওয়ার্ল্ড ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি আনোয়ারুল কাদির ফাউন্ডেশনের সাথেও যুক্ত যেটি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করে থাকে। বিকাশের এক দশক পূর্ণ হওয়ার পর, ২০২১ সালে ২০০ কোটি ডলারের বেশি বাজার মূল্য অর্জন করেছিল। বিকাশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কামাল কাদীরের জীবনের বহুমুখী অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশকে একটি সফল উদ্যোগে পরিণত করেছে।