কলারোয়া: সাতক্ষীরা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা
বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থিত কলারোয়া উপজেলা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক গুরুত্বের দিক দিয়ে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। প্রায় ২৩১.৪২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলাটি ২২°৪৮´ থেকে ২২°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৪´ থেকে ৮৯°০৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। উত্তরে শার্শা, ঝিকরগাছা ও মনিরামপুর, দক্ষিণে সাতক্ষীরা সদর ও তালা, পূর্বে কপোতাক্ষ নদ এবং কেশবপুর, মনিরামপুর ও তালা, এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত।
জনসংখ্যা ও জনবসতি:
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী কলারোয়ার জনসংখ্যা প্রায় ২৩৭,৯৯২; পুরুষ ১১৬,৮১১ এবং মহিলা ১২১,১৮১। ধর্মীয়ভাবে, এখানে অধিকাংশ লোক মুসলিম (২২৩,৪৫৯), এছাড়াও হিন্দু (১২,৩৬৩), খ্রিস্টান (১৮১২) ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও বসবাস করেন।
প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনীতি:
কলারোয়ার অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, পটল, আলু, গম, পান, সরিষা এবং শাকসবজি এখানকার প্রধান কৃষি ফসল। চিংড়ি চাষও একটি উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামারও রয়েছে। কুটিরশিল্পের মধ্যে লৌহশিল্প, মৃৎশিল্প, তাঁতশিল্প, সেলাই কাজ, বিড়ি তৈরি, বুটিক হাউজ এবং রেশম গুটি উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা ও সংস্কৃতি:
শিক্ষার হার ৫০.৯%। কলারোয়ায় ১০টি কলেজ, ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫টি স্যাটেলাইট স্কুল এবং ৬৪টি মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কলারোয়া সরকারি কলেজ (১৯৬৯), শেখ আমানুল্লাহ ডিগ্রি কলেজ (১৯৯৩), ধানদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১৯১৫) এবং কলারোয়া জি কে এম কে পাইলট হাই স্কুল (১৯৩০) উল্লেখযোগ্য। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫টি লাইব্রেরি, ১টি পাবলিক ইনস্টিটিউট, ৪১টি ক্লাব, ৩টি সিনেমা হল, ১২টি মহিলা সংগঠন এবং ২৭টি খেলার মাঠ রয়েছে।
ঐতিহাসিক ঘটনা:
কলারোয়া থানা গঠিত হয় ১৮৫১ সালে। ১৯৬১ সালে সাতক্ষীরা মহকুমার সদর দফতর সাতক্ষীরায় স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে কলারোয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে কলারোয়ার বালিয়াডাঙ্গা পুকুরপাড়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এছাড়াও শ্যামসুন্দর মন্দির ও সোনাবাড়িয়া তিনতলা মঠ, কোঠাবাড়ি থানা এবং চেড়াঘাট কায়েম মসজিদ (১৮৬২) উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা।
অবকাঠামো:
যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে ৪৮০ কিমি পাকা রাস্তা, ৩৪.৬০ কিমি আধা-পাকা রাস্তা এবং ৩০৫.২০ কিমি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। নৌপথও রয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ ৪৪.৬% পরিবারের রয়েছে। পানীয় জলের প্রধান উৎস নলকূপ। অনেক অগভীর নলকূপে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য ১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১২টি পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র এবং ১টি ক্লিনিক রয়েছে।
উল্লেখ্য:
উপরোক্ত তথ্য বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি আরও বিস্তারিত তথ্যের প্রয়োজন হয়, আমরা আপনাকে পরবর্তীতে আপডেট করবো।