উপকূলীয় কৃষি

উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা একটি প্রধান সমস্যা, যার ফলে প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে প্রায় সাড়ে চার লাখ হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যায়। বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও বরিশাল জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত গবেষক ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী এই সমস্যা সমাধানে ‘রিলে পদ্ধতিতে’ গম ও মুগডাল চাষের একটি টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চের সহায়তায় সাত-আট বছর ধরে তিনি এই গবেষণা করেছেন। এই পদ্ধতিতে, নভেম্বর মাসে আমন ধান কাটার আগেই জমিতে গমের বীজ ছিটানো হয়। গম অপেক্ষাকৃত লবণাক্ততা সহিষ্ণু এবং কম সেচে ভাল ফলন দেয়। বরগুনার নলবুনিয়ার কৃষকরা এই পদ্ধতি সফলভাবে ব্যবহার করেছেন এবং উৎপাদন খরচ কমেছে বলে জানিয়েছেন। তবে, উপকূলের লবণাক্ত জমির নিচে থাকা পানি সেচের উপযোগী নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ১১০০-১২০০ ফুট গভীরের পানি লবণাক্ততামুক্ত এবং সেচের জন্য উপযোগী। সাবমারসিবল পাম্প ব্যবহার করে এই গভীর থেকে পানি উত্তোলন সম্ভব। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপকূলীয় কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।

মূল তথ্যাবলী:

  • উপকূলীয় লবণাক্ততায় প্রায় সাড়ে চার লাখ হেক্টর জমি অনাবাদি থাকে।
  • ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগীর ‘রিলে পদ্ধতি’ গম চাষে সফলতা এনেছে।
  • রিলে পদ্ধতিতে কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়।
  • গভীর থেকে লবণাক্ততামুক্ত পানি উত্তোলনের মাধ্যমে সেচ সমস্যা সমাধান সম্ভব।