ইশতিয়াক আহমেদ

আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮:৩১ এএম

বাংলাদেশের আইন, রাষ্ট্রনীতি ও সংবিধানের অমিত সম্পদ ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ (১৯৩২-২০০৩):

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দেশের রাষ্ট্রনীতি ও আইন ব্যবস্থার গঠনে অপরিসীম অবদান রেখেছেন। ১৯৩২ সালের ১৮ জানুয়ারি অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ জাফর আহমেদ ছিলেন দিনাজপুরের (পশ্চিমবঙ্গ) হিলির একজন জমিদার ও ব্যবসায়ী।

শিক্ষাজীবন:

হিলির রামনাথ ইংরেজি হাইস্কুলে এবং কলকাতা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর, দেশবিভাগের পর তিনি পরিবারের সাথে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ও এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে লন্ডনের লিংকনস ইন থেকে বার-এট-ল এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস্ থেকে অর্থনীতিতে এম.এসসি ডিগ্রী লাভ করেন।

রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড:

ছাত্র জীবনে মুকুল ফৌজ ও ব্রতচারী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ভাষা আন্দোলন এবং পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য কারারুদ্ধ হন। ১৯৬০ সাল থেকে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৬১ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রের খন্ডকালীন অধ্যাপক এবং ১৯৭২-১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭২ সালে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এবং ১৯৭৬ সালে এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আইন ও রাষ্ট্রনীতিতে অবদান:

তিনি দুইবার (১৯৭৮-১৯৭৯, ১৯৮৯-১৯৯০) সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। কোম্পানি আইন সংস্কার কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায় এবং ৮ম সংশোধনী বাতিলের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং কারাভোগ করেন। ১৯৯১ সালে নির্বাচিত সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর রাষ্ট্রপতি শাসনের পরিবর্তে সংসদীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সম্মাননা:

আইন ও রাষ্ট্রনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বহু সম্মাননা লাভ করেন। সাপ্তাহিক যায় যায় দিন তাঁকে ১৯৯৫ সালে ‘ডেমোক্রাসি অ্যাওয়ার্ড’ স্বর্ণপদক প্রদান করে।

মৃত্যু:

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ২০০৩ সালের ১২ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের আইন ও রাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে এক অনূপম ক্ষতি ছিল।

মূল তথ্যাবলী:

  • সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
  • তিনি দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
  • তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন।
  • তিনি গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন।
  • তার নামে একটি আইন সাংবাদিকতা পুরস্কার চালু করা হয়েছে।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - ইশতিয়াক আহমেদ

ইশতিয়াক আহমেদ বন্ধুদের সাথে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন এবং পরে মারা যান।

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ইশতিয়াক আহমেদ টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন।