ইলহাম হেইদার ওগলু আলিয়েভ (আজারবাইজানি: İlham Heydər oğlu Əliyev; জন্ম: ২৪ ডিসেম্বর, ১৯৬১) আজারবাইজানের চতুর্থ এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি। ২০০৩ সাল থেকে তিনি এই পদে আছেন। তিনি নতুন আজারবাইজান দলের সভাপতি, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সভাপতি এবং আজারবাইজানের জাতীয় অলিম্পিক কমিটির প্রধানও বটে। আলিয়েভের পিতা, হেইদার আলিয়েভ, ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ইলহাম আলিয়েভের রাজনৈতিক কর্মজীবনের প্রারম্ভে তিনি মস্কো স্টেট ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স (MGIMO) থেকে স্নাতক এবং পরে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৪ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি SOCAR-এর (আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস কোম্পানি) ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং পরে প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি নতুন আজারবাইজান দলের প্রথম উপ-সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০০৫ সালে দলের সভাপতি হন।
২০০৩ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ের পর থেকে আলিয়েভের শাসনামলে বেশ কিছু সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, স্বৈরশাসন এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আলিয়েভের শাসনামলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে মুক্ত ও ন্যায্য বলে স্বীকার করেনি। ২০০৯ সালের একটি সাংবিধানিক গণভোটে রাষ্ট্রপতির মেয়াদসীমা তুলে দেওয়া হয়, যার ফলে আলিয়েভ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে পারেন।
আলিয়েভের পরিবারের রাষ্ট্র-চালিত ব্যবসায় জড়িত থাকার এবং অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে অর্থ লুকানোর অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে ব্যাংক, নির্মাণ সংস্থা এবং টেলিযোগাযোগ সংস্থার উল্লেখযোগ্য অংশের মালিকানা থাকার অভিযোগ রয়েছে। তার শাসনামলে, আজারবাইজান ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া এবং ন্যাটো'র সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তিনি ২০০৪, ২০১০ এবং ২০১৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বক্তব্যে অংশগ্রহণ করেছেন। আলিয়েভের শাসনামলে আজারবাইজান ২০২০ সালে নাগোর্নো-কারাবাখ যুদ্ধে জড়িত ছিল এবং পরবর্তীতে ২০২৩ সালে বিতর্কিত অঞ্চলে আবারও সামরিক আক্রমণ চালিয়েছে যার ফলে হাজার হাজার আর্মেনিয়ান উদ্বাস্তু হয়েছে। এই ঘটনাগুলির পর, আলিয়েভের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বাংলাদেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং ঢাকায় একটি আবাসিক দূতাবাস খোলার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন।