আশ্রাফপুর নামে বাংলাদেশে দুটি স্থান রয়েছে। একটি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায় এবং অপরটি চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলায়।
- *আশ্রাফপুর, নরসিংদী:**
নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলায় অবস্থিত আশ্রাফপুর একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমৃদ্ধ গ্রাম। ১৮৮৫ সালে এখান থেকে উদ্ধারকৃত দুটি তাম্রশাসন এই গ্রামের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে উজ্জ্বল করে তুলেছে। লিপিগুলোর পাঠ থেকে জানা যায়, খড়্গ বংশের রাজা দেবখড়্গ বৌদ্ধ সংঘ ও বিহারের জন্য এখানে ভূমি দান করেছিলেন। মাটির নিচে প্রাচীন ইট ও প্রাচীরের অস্তিত্ব এ গ্রামে বৌদ্ধ বিহার এবং ধর্ম ও জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র ছিল বলে প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা প্রতিষ্ঠা করে।
এই গ্রামে অবস্থিত আশ্রাফপুর মসজিদ একটি সুপ্রাচীন মসজিদ। ৯৩০ হিজরী (১৫২৪ খ্রিষ্টাব্দ) সালে দিলওয়ার খান কর্তৃক নির্মিত এ মসজিদের তুগরা রীতিতে উৎকীর্ণ একটি শিলালিপি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং পরে ১৯৪০ সালে মওলানা সৈয়দ আলীর নেতৃত্বে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে একই স্থানে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট একটি নতুন মসজিদ নির্মিত।
- *আশ্রাফপুর, চাঁদপুর:**
চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার ১২ নং ইউনিয়ন আশ্রাফপুর। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আশ্রাফপুর ইউনিয়নের আয়তন ৫,৭৭৭ একর এবং জনসংখ্যা ৩৬,৫২০ জন (পুরুষ ১৭,০১৬ জন ও মহিলা ১৯,৫০৪ জন)। মোট পরিবার ৭,৭০১টি। সাক্ষরতার হার ৫৫.১%। কচুয়া উপজেলার সর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত এই ইউনিয়ন। কৃষি এই ইউনিয়নের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। এখানে অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি আশ্রাফপুরে বিখ্যাত একটি দিঘি ও বাজার রয়েছে। প্রয়াত জনাব সেকান্দর আলী (সাবেক এমপি) এবং জনাব ইয়াসিন মিয়া ও আবুল কালাম আযাদ (সাবেক চেয়ারম্যান) এই ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। আশ্রাফপুর চৌধুরী বাড়ী জামে মসজিদ মোগল আমলে নির্মিত।