জুলাই বিপ্লবের এক শহীদ: আরাফাত হোসাইন
গত জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘ চিকিৎসাধীন থাকার পর ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর কেন্টনমেন্ট হাসপাতালে (সিএমএইচ) ইন্তেকাল করেন আরাফাত হোসাইন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। তিনি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানার বাসিন্দা শহিদুল ইসলামের পুত্র ছিলেন এবং পেশায় তার পিতা রিকশাচালক ছিলেন। আরাফাত রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত জামিয়া রাওজাতুল উলূম মাদরাসার ইবতেদায়ি আউয়ালের শিক্ষার্থী ছিলেন।
৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের বিজয় মিছিলে অংশগ্রহণ করার সময় পুলিশের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হন। গুলি তার বাম পাজর দিয়ে ঢুকে ডান পাজর দিয়ে বের হয়ে যায়, মেরুদণ্ড ভেঙে যায় এবং একটি কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাকে প্রথমে আধুনিক হাসপাতাল এবং পরে কুর্মিটোলায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলেও সেখানে চিকিৎসা সম্ভব না হওয়ায় তাকে সিএমএইচতে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি। কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন সাধারণ আলেম সমাজ এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং আরাফাতের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের এমন ত্যাগ ও সাহসিকতা ইতিহাসের পাতায় নতুন অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছে বলেও তারা মনে করেন। আরাফাতের জানাজা শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় এবং উত্তরা ১৪নং সেক্টর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।