আমিরুল

আপডেট: ৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০৫ পিএম

আমিরুল ইসলাম: একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা

এই লেখাটিতে ‘আমিরুল ইসলাম’ নামের একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ রয়েছে। বিভ্রান্তি এড়াতে, আমরা তাদের পৃথকভাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করব।

১. ড. এম আমিরুল ইসলাম (বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ):

ড. এম আমিরুল ইসলাম (১৯১৮-২০০১) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ। তিনি নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৬ সালে এন্ট্রান্স ও ১৯৩৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে ১৯৪১ সালে বি.এসসি (সম্মান) এবং ১৯৪২ সালে এম.এসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে প্রথম শ্রেণি অর্জনকারী প্রথম মুসলমান ছাত্র ছিলেন। ১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৫০ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান সরকারের কৃষি রসায়নবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানের মৃত্তিকার প্রথম প্রযুক্তিগত শ্রেণিবিন্যাস (Seven Soil Tracts System of Bangladesh) করেন, যা বাংলাদেশের মৃত্তিকা বিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তিনি মৃত্তিকা জরিপ অধিদপ্তরে যোগদান করেন এবং ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে সরকারের কৃষি বিভাগের পরিচালক এবং ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রথম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিরি)-এর পরিচালক হিসেবে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটিকে ধান গবেষণার একটি উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলেন। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের নির্বাহী সহ-সভাপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।

২. ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম (আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ):

ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম (জন্ম: ২ জানুয়ারি ১৯৩৭) একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশী আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র রচনায় অবদান রাখেন। তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন এবং ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে কুষ্টিয়া সিরাজুল হক মুসলিম হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৪ সালে ঢাকার জগন্নাথ কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট, এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি এবং সাধারণ ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে লন্ডনের লিঙ্কনস ইন থেকে ব্যারিস্টার ডিগ্রি অর্জন করেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার তিনি ছিলেন আইনজীবী।

৩. সৈয়দ আমিরুল ইসলাম (সাবেক বিচারপতি):

সৈয়দ আমিরুল ইসলাম (১৩ জানুয়ারি ১৯৪০ – ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২) বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতি। ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা পরিচালনার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন। কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে এমএ এবং ১৯৬৪ সালে ব্যাচেলর অব ল’ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭২ সালে লন্ডনের লিংকনস্‌ ইন থেকে বার এট ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ১৯৯৬ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালে বিচারক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, উপরোক্ত তথ্যগুলি প্রদত্ত তথ্যের উপর ভিত্তি করে উৎপাদিত হয়েছে। যদি আরও তথ্য প্রয়োজন হয়, আমরা তখন আপনাকে অবহিত করব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ড. এম আমিরুল ইসলাম: একজন বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ
  • ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম: বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র রচনায় অবদান
  • সৈয়দ আমিরুল ইসলাম: বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সাবেক বিচারপতি

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।