আব্বাস: একাধিক ব্যক্তি ও প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণ
'আব্বাস' নামটি একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত, যার ফলে বিভ্রান্তি হতে পারে। এই লেখায় আমরা এই নামের সাথে সম্পর্কিত তিনটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব এবং একটি চলচ্চিত্রের বিশ্লেষণ করবো।
১. আব্বাস (চলচ্চিত্র): ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই বাংলাদেশী চলচ্চিত্রটি সাইফ চন্দন পরিচালিত ও ঢাকা ফিল্মস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট প্রযোজিত। চলচ্চিত্রটি পুরান ঢাকার একজন মাস্তান আব্বাসের জীবনকাহিনী নিয়ে নির্মিত। নিরব, সোহানা সাবা এবং সূচনা আজাদ মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। চলচ্চিত্রটির নির্মাণ শুরু হয় ২০১৭ সালের শেষ দিকে এবং ২০১৯ সালের মে মাসে সম্পন্ন হয়। জুলাইতে ৩৭টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
২. আব্বাসউদ্দীন আহমদ: (২৭ অক্টোবর ১৯০১ – ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫৯) একজন বিখ্যাত বাঙালি লোকসঙ্গীত শিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার ছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার বলরামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর প্রাইড অফ পারফরম্যান্স (১৯৬০), শিল্পকলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৭৯) এবং স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৮১) পেয়েছিলেন। পল্লীগীতি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, জারি, সারি, বিচ্ছেদী প্রভৃতি গানে তার অসাধারণ দক্ষতা ছিল। তিনি কাজী নজরুল ইসলামের গানও গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তিনি কলকাতায় কাজী নজরুল ইসলামের সাহায্যে গ্রামোফোন রেকর্ডে গান রেকর্ড করেন। ঢাকায় এসে সরকারি চাকরিতেও যুক্ত ছিলেন। তার পুত্র মোস্তফা জামান আব্বাসী ও কন্যা ফেরদৌসী রহমান ও সঙ্গীত জগতে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
৩. আব্বাস সিদ্দিকী: একজন ইসলামী পণ্ডিত, বক্তা ও রাজনীতিবিদ। তিনি ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট নামক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণকারী আব্বাস ফুরফুরা শরীফের ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সদস্য। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফুরফুরা টাইটেল মাদ্রাসা থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় সভায় বক্তৃতা দিয়েছেন এবং ফুরফুরা শরিফ আহলে সুন্নাতুল জামাত নামক একটি সংগঠন ও ফুরফুরা নলেজ সিটির প্রতিষ্ঠায় জড়িত। ২০২১ সালে ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট প্রতিষ্ঠার পর তার ভাই নওশাদ সিদ্দিকী দলটির চেয়ারম্যান হন। তিনি বিতর্কিত বক্তব্যের জন্যও বিভিন্ন সময় আলোচনায় ছিলেন।
৪. মির্জা আব্বাস: একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য। ১৯৫১ সালে কিশোরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নারী শিক্ষার জন্য মির্জা আব্বাস মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ঢাকা ব্যাংক প্রতিষ্ঠায়ও জড়িত। বিভিন্ন সময়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
উপরোক্ত তথ্য দ্বারা 'আব্বাস' নামের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রেক্ষাপট স্পষ্ট হয়েছে। আশা করি এই বিশ্লেষণ পাঠকদের জন্য উপকারী হবে।