পল্লীকবি জসীম উদ্দীন: বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ
জসীম উদ্দীন (১ জানুয়ারি ১৯০৩ - ১৪ মার্চ ১৯৭৬) বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। 'পল্লীকবি' উপাধিতে ভূষিত এই মহান ব্যক্তিত্ব কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক হিসেবে সুপরিচিত। তার জন্ম ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে। পূর্ণ নাম মোহাম্মদ জমীর উদ্দীন মোল্লা হলেও তিনি জসীম উদ্দীন নামেই বহুল পরিচিত ছিলেন।
জসীম উদ্দীনের সাহিত্যকর্মের মূল প্রেরণা ছিল গ্রাম-বাংলার জীবন, প্রকৃতি ও মানুষের আবেগ। 'নকশী কাঁথার মাঠ' এবং 'সোজন বাদিয়ার ঘাট' তার সবচেয়ে বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। তার অসংখ্য পল্লীগীতি এখনও গ্রামবাংলার মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত। 'আমার হাড় কালা করলাম রে', 'আমায় ভাসাইলি রে', 'বন্ধু কাজল ভ্রমরা রে' এই গানগুলি তার উল্লেখযোগ্য।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা লাভের পর জসীম উদ্দীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ বছর শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার এবং পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৬২ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক। পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন।
তিনি প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার (১৯৫৮), বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক (১৯৭৬) এবং স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর, ১৯৭৮) লাভ করেন। তবে ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৬৯ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে।
জসীম উদ্দীন ১৪ মার্চ ১৯৭৬ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুসারে ফরিদপুর জেলার অম্বিকাপুর গ্রামে তার দাদীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়েছে।
জসীম উদ্দীন ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক।
জসীম উদ্দীন গ্রামীণ বাংলার জীবন, প্রকৃতি ও মানুষের আবেগকে তার সাহিত্যে ফুটিয়ে তুলেছেন।
তার নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্ট নিদর্শন।
জসীম উদ্দীন অসংখ্য পল্লীগীতি রচনা করেছেন যা আজও জনপ্রিয়।
তিনি পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন।
জসীম উদ্দীন বিভিন্ন পুরষ্কারে ভূষিত হন।
তিনি ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং ফরিদপুরে সমাহিত হন।