আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC): বিশ্বের সর্বোচ্চ ফৌজদারী আদালত
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ফৌজদারী আদালত। ১৯৯৮ সালে রোমে অনুষ্ঠিত একটি কূটনৈতিক সম্মেলনের মাধ্যমে রোম স্ট্যাটুট গৃহীত হয়, যার ফলে ২০০২ সালের ১লা জুলাই আদালতটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে এর স্থায়ী কার্যালয় অবস্থিত। এই আদালত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আগ্রাসন অপরাধের মামলা পরিচালনা করে।
আদালতের ইতিহাস:
- ১৯৯৭ সালের ১৭ জুলাই: রোম নীতিমালা গৃহীত হয়, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ভিত্তি স্থাপন করে।
- ১৯৯৮ সাল: রোমে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে রোম স্ট্যাটুট গৃহীত হয়।
- ২০০২ সালের ১লা জুলাই: আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
আদালতের কাজ:
ICC বিভিন্ন দেশে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করে। ২০০৪ সালে গণতান্ত্রিক কঙ্গোতে প্রথম তদন্ত শুরু হয়। পরে সুদান, উগান্ডা, কেনিয়া, আইভরি কোস্ট, লিবিয়া, ইত্যাদি দেশে তদন্ত চালানো হয়। আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, জর্জিয়া, গিনি, হন্ডুরাস, ইরাক, নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনেও সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও মামলা:
ICC বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিকে অপরাধের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে বা তাদের বিরুদ্ধে মামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে উগান্ডার বিদ্রোহী নেতা জোসেফ কোনি, সুদানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশির, কেনিয়ার রাষ্ট্রপতি উহুরু কেনিয়াত্তা, লিবিয়ার প্রয়াত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি এবং আইভরি কোস্টের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লরেন্ট জিবাগবো অন্যতম।
সীমাবদ্ধতা:
ICC-এর নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই। তাই অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দণ্ড কার্যকর করার জন্য তারা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সহযোগিতার উপর নির্ভর করে। রাশিয়া, চীন, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ ICC-কে স্বীকৃতি দেয়নি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ভবিষ্যৎ:
বিশ্বের ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় ICC-এর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া জটিল ও চ্যালেঞ্জিং হলেও, ICC বিশ্বব্যাপী শান্তি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।