আকাশকলি দাস: এক পাখিপ্রেমীর গল্প
পাবনার বেড়া উপজেলার কৈটোলা গ্রামের আকাশকলি দাস (৮৮/৯০) একজন প্রকৃতিপ্রেমী, বিশেষ করে পাখিপ্রেমিক হিসেবে পরিচিত। তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাঁর জঙ্গলঘেরা সাড়ে পাঁচ বিঘা আয়তনের পৈতৃক বাড়িটি ‘পাখি অভয়ারণ্য’ হিসেবে পরিচিত। এই বাড়িতে তিনি শত শত দেশীয় ও পরিযায়ী পাখিকে আশ্রয় ও খাবার দিয়ে তাদের রক্ষা করে আসছেন।
তাঁর এই অকৃত্রিম পাখিপ্রেমের জন্য ২০১৪ সালের জানুয়ারীতে মৎস্য অধিদপ্তরের ওয়েটল্যান্ড বায়োডাইভারসিটি রিহ্যাবিলিটেশন প্রজেক্ট (ডব্লিউবিআরপি) তাঁর বাড়িটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পাখি অভয়ারণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করে। এছাড়াও, তাঁর পাখিপ্রেমের স্বীকৃতিস্বরূপ চলতি বছরের ৫ জুন তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন-২০২৪’ প্রদান করা হয়।
আকাশকলি দাসের বাড়িতে বহু প্রজাতির পাখি আশ্রয় নেয়, যেমন দেশীয় বক, কানি বক, পানকৌড়ি, শামুকখোল, ঘুঘু, দোয়েল, শালিক, ছোট ও বড় সরালি, খঞ্জনা, পাতিহাঁস ইত্যাদি। শীতকালে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চোরা শিকারিরা তাদের হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। খাবারের সন্ধানে আশপাশের বিল ও চরাঞ্চলে যাওয়া পাখি অনেকসময়ই আর ফিরে আসে না।
আকাশকলি দাস তাঁর অভয়াশ্রমে পাখিদের পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করেন। তিনি তাঁর বোন ঝর্ণা দাস (৭০) এর সাথে এই বাড়িতে বসবাস করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই রাস্তা থেকে কুকুর ও বিড়ালদের উদ্ধার করে তাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তাঁর বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে ‘পাখি অভয়ারণ্য’ হিসেবে পরিচিত এবং একটি পরিবেশগত দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে সরকারি সহায়তা ও উদ্যোগের অভাবে অভয়াশ্রমের পাখি সংরক্ষণের কাজে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে।