চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঘটে যাওয়া সাত খুনের চাঞ্চল্যকর ঘটনার একমাত্র অভিযুক্ত হলেন আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান (২৬)। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) -এর তদন্তে জানা গেছে, জাহাজের মাস্টারের প্রতি পূর্বের ক্ষোভের কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ মণ্ডল স্বীকার করেছেন যে, তিনি জাহাজের মাস্টারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং পরবর্তীতে অন্যান্য ক্রুর সদস্যদেরও হত্যা করার চেষ্টা করেছেন।
আকাশ মণ্ডল 'এমভি আল-বাখেরা' নামক সারবাহী জাহাজে লস্কর হিসেবে কাজ করতেন। তিনি জানিয়েছেন, জাহাজের মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে তাঁর বেতন-ভাতা ও ছুটি প্রদান করেননি এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সাথেও অন্যায় আচরণ করতেন। এই কারণেই তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
২৩শে ডিসেম্বর, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে জাহাজে থাকা অবস্থায় আকাশ মণ্ডল তরকারীর সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে দেন। রাত তিনটার দিকে তিনি জাহাজে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে জাহাজের মাস্টারকে হত্যা করেন। অন্যদের জীবিত রাখলে নিজের পরিচয় প্রকাশ হওয়ার আশঙ্কায় তিনি বাকিদেরও হত্যার চেষ্টা করেন। ফলে সাত জনের মৃত্যু হয় এবং একজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পর আকাশ মণ্ডল জাহাজটি চালিয়ে মাঝিরচর এলাকায় নিয়ে যান এবং পালিয়ে যান। পরবর্তীতে ২৪শে ডিসেম্বর রাতে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে র্যাব তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, রক্তমাখা পোশাক, এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়। আকাশ মণ্ডলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর গ্রামে। তিনি জগদীশ মণ্ডলের ছেলে।
এই ঘটনায় চাঁদপুরের হাইমচর থানায় অজ্ঞাত ডাকাত দলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আকাশ মণ্ডলকে ৭ দিনের রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে তদন্তের জন্য। ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।