হেজবুল্লাহ (আরবি: حزب الله, অর্থ: আল্লাহর দল) লেবাননে ভিত্তিক একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র সংগঠন। এটি ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েলের বিরোধিতার জন্য ইরানের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয়। লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় দেশটির দক্ষিণাঞ্চল দখল করে নেয় এবং ১৯৯২ সাল থেকে দেশটির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে আসছে। লেবাননের প্রথম সারির রাজনৈতিক দল হিসেবেও এদের বিবেচনা করা হয়।
হেজবুল্লাহর একটি সামরিক শাখা (জিহাদ কাউন্সিল) এবং রাজনৈতিক শাখা (লয়ালটি টু দ্য রেসিস্ট্যান্স ব্লক) রয়েছে। এটি ইরান ও সিরিয়া থেকে আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন পায় এবং এর সামরিক শাখাকে আরব এবং মুসলিম বিশ্বের অনেক অংশে প্রতিরোধের আন্দোলন হিসাবে দেখা হয়। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইউরোপের কিছু দেশসহ অনেক দেশ হেজবুল্লাহকে পুরোপুরি অথবা আংশিকভাবে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
হেজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসান নাসরাল্লাহ। সংগঠনটি লেবাননে ইসরায়েলি ও মার্কিন বাহিনীর উপর মারাত্মক হামলা চালিয়েছে এবং ২০০০ সালে লেবানন থেকে ইসরায়েলের সৈন্য প্রত্যাহারের কৃতিত্ব নিয়েছে। দক্ষিণ লেবাননে হাজার হাজার যোদ্ধা ও বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে হেজবুল্লাহর। ২০০৬ সালে ইসরায়েলের সাথে ৩৪ দিনের যুদ্ধ এবং ২০২৩ সালের গাজা যুদ্ধের পর ইসরায়েল-হেজবুল্লাহর মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ হয়েছে।
হেজবুল্লাহর সামরিক শক্তি বিশাল। বিভিন্ন সূত্রের মতে, তাদের কাছে ১ লক্ষ থেকে ২ লক্ষ রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, এবং তারা ইরান থেকে উন্নত অস্ত্র সরবরাহ পেয়ে থাকে। তাদের যোদ্ধাদের সংখ্যা বিভিন্ন অনুমানের মধ্যে ২০,০০০ থেকে ১ লক্ষ পর্যন্ত। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধেও হেজবুল্লাহর যোদ্ধারা অংশগ্রহণ করেছে। হেজবুল্লাহ শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা ভোগ করে।
হেজবুল্লাহর প্রকৃতি, কার্যকলাপ এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। এটি লেবাননের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।