সেকেন্দ্রাবাদ: হায়দ্রাবাদের যমজ শহর
সেকেন্দ্রাবাদ (Sikandarabad), তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদের সাথে যুক্ত একটি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ শহর। ১৬০৬ সালে আসফ জাহি রাজবংশের তৃতীয় নিজাম, সিকান্দার জাহের নামানুসারে এটি সেনানিবাস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। হায়দ্রাবাদ থেকে হুসেন সাগর হ্রদ দ্বারা বিভক্ত হলেও, উভয় শহরই একত্রে হায়দ্রাবাদ নামে পরিচিত এবং ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম মহানগরী গঠন করে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
১১ শতকে চালুক্য সাম্রাজ্যের পতনের পর, এই অঞ্চল কাকাতিয়া রাজবংশের অধীনে ছিল। ১৭৫৪ সালে, মুঘল সম্রাট আহমেদ শাহ বাহাদুর মারাঠা কনফেডারেশনের কাছে পরাজিত হন এখানে। পরবর্তীতে, বিভিন্ন শাসকের নিয়ন্ত্রণে থাকার পর, ১৮ শতকে এটি নিজামের হায়দ্রাবাদের অংশ হয়। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে নিজামের সংঘর্ষের পর, সেকেন্দ্রাবাদ ব্রিটিশ সেনানিবাসে পরিণত হয়। ১৮০৩ সালে, তৃতীয় নিজাম সিকান্দার জাহ উলউল গ্রামের নাম পরিবর্তন করে সেকেন্দ্রাবাদ রাখেন।
ব্রিটিশ আমলে উন্নয়ন:
ব্রিটিশ শাসনামলে সেকেন্দ্রাবাদ উল্লেখযোগ্যভাবে বিকশিত হয়। ১৮৭৪ সালে সেকেন্দ্রাবাদ জংশন রেলওয়ে স্টেশন প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ের জোনাল হেডকোয়ার্টার। ১৮৫১ সালে কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতাল (বর্তমান গান্ধী হাসপাতাল) প্রতিষ্ঠিত হয়। সেকেন্দ্রাবাদে একটি সিভিল জেল, রেসিডেন্সি হাউস (বর্তমানে রাষ্ট্রপতি নিলাম) এবং বিখ্যাত সিকান্দারাবাদ ক্লাবও স্থাপিত হয়। স্যার উইনস্টন চার্চিল এবং স্যার রোনাল্ড রস এই শহরের সাথে জড়িত ছিলেন।
বর্তমান সেকেন্দ্রাবাদ:
বর্তমানে, সেকেন্দ্রাবাদ বৃহত্তর হায়দ্রাবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে ITC, Infosys, এবং অন্যান্য বহুজাতিক কোম্পানির অফিস রয়েছে। প্রতিরক্ষা স্থাপনা, শিল্প এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং রেলওয়ের জন্য সেকেন্দ্রাবাদ উল্লেখযোগ্য। জিএইচএমসি (Greater Hyderabad Municipal Corporation) সেকেন্দ্রাবাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে। এটি হায়দ্রাবাদের সাথে ট্যাঙ্ক বান্ড রাস্তা এবং হায়দ্রাবাদ মেট্রোর মাধ্যমে সংযুক্ত।