সুন্নি ইসলাম: বিশ্বের বৃহত্তম ইসলামী সম্প্রদায়
সুন্নি ইসলাম, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাʿআহ নামেও পরিচিত, ইসলামের সবচেয়ে বৃহৎ শাখা। বিশ্বের মুসলিম জনসংখ্যার ৮৭-৯০% সুন্নি মতাবলম্বী। 'সুন্নাহ' শব্দটি নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনাচার ও অনুশীলনকে বোঝায়, যা সুন্নিদের ধর্মীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে পার্থক্য মূলত নবী মুহাম্মদের উত্তরাধিকারী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে ধর্মতাত্ত্বিক ও আইনগত মাত্রা অর্জন করে।
সুন্নি ঐতিহ্য অনুযায়ী, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কোন উত্তরসূরি নির্দেশ করেননি। আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে প্রথম খলিফা হন। এ বিষয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন, তাদের মতে আলী ইবনে আবী তালিব (রাঃ) নবীর উত্তরসূরি ছিলেন।
সুন্নি ইসলামের মূল ভিত্তি হলো কুরআন, হাদিস (বিশেষ করে কুতুব আল-সিত্তাহ), এবং ইজমা (সম্মতি)। চারটি প্রধান মাযহাব (হানাফী, মালিকী, শাফিঈ, এবং হাম্বলী) সুন্নি ফিকহের বিভিন্ন ব্যাখ্যাকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই মাযহাবগুলোর মধ্যে ছোটখাটো পার্থক্য থাকলেও, সুন্নি সম্প্রদায় এগুলোকে সকলকেই গ্রহণ করে।
হানাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আবু হানিফা, মালিকী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম মালিক, শাফিঈ মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম শাফিঈ, এবং হাম্বলী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ইসলামী আইন ও ধর্মতত্ত্বের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। তাদের জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ, মাযহাবের প্রভাব ও প্রসার ইত্যাদি বিষয়গুলো সুন্নি ইসলামের ইতিহাস ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুন্নি ইসলামের আকিদাগত দিকেও আশআরি, মাতুরিদি প্রমুখ ধারা বিদ্যমান।
সুন্নি ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে আরও গবেষণা ও আলোচনার মাধ্যমে এই সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধ ইতিহাস, ধর্মীয় অনুশীলন, ও সামাজিক প্রভাবের আরো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব।