শরণার্থী শিবির

আপডেট: ৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১:৪৫ এএম

কুতুপালং শরণার্থী শিবির: বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির

বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলায় অবস্থিত কুতুপালং শরণার্থী শিবির বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির হিসেবে পরিচিত। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই এখানে আশ্রয় নিয়েছে। ১৯৯১ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর 'অপারেশন পিয়ি থায়া'র পর থেকে ধীরে ধীরে এই শিবিরের বিকাশ ঘটে। তবে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক অভিযানের পর এক অভূতপূর্ব সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং কুতুপালং শিবির ও আশেপাশের অস্থায়ী শিবিরগুলিতে (ঘুমদুম, বালুখালী, থংখালী ইত্যাদি) জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। জুলাই ২০১৭ সালে কুতুপালং ও নয়াপাড়া শিবিরে মোট ৩৪,০০০ রোহিঙ্গা ছিল, কিন্তু ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ইউএনএইচসিআর ৭৭,০০০ এর বেশি উদ্বাস্তুর উপস্থিতি নিশ্চিত করে। ২০২০ সালের জুনে শিবিরের জনসংখ্যা ছিল ৫৯৮,৫৪৫ জন এবং ২০২৪ সালের জুনে প্রায় ৯৫০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে।

শিবিরটির ভৌগোলিক অবস্থান (ঢালু পাহাড়ি এলাকা) এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতা (কমজোর আশ্রয়স্থল) বন্যা ও ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, বিশেষ করে বর্ষাকালে। মানবাধিকার সংগঠনগুলি নিরাপদ ও শক্তিশালী আশ্রয়স্থলে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছে। শিবিরের বিকাশে প্রায় ৮,০০০ একর বন উজাড় হয়েছে, যার ফলে পরিবেশগত ক্ষতি এবং স্থানীয়দের অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও, শিবিরটি এশিয়ান হাতির ঐতিহাসিক বাসস্থানের পথে অবস্থিত, যা মানুষ ও হাতির সংঘাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। স্থানীয়রা রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনে। বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য চেষ্টা করেছে, কিন্তু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে চলমান নির্যাতন ও নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যানের কারণে প্রত্যাবাসনে অনীহা প্রকাশ করে। সরকার বঙ্গোপসাগরে ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং রোহিঙ্গারা এ প্রস্তাবে বিরোধিতা করেছে। শিবিরে সময় সময় অগ্নিকাণ্ড ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছে, যা শরণার্থীদের জীবনে বিপুল কষ্ট আনে। বিভিন্ন দেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি শরণার্থীদের সহায়তা প্রদান করে আসছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের নিরাপত্তা বিষয়ক কড়াকড়ি এবং কমিউনিকেশন নিষেধাজ্ঞা শরণার্থীদের জীবনে অনেক কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এ বিষয়ে আমাদের চলমান গবেষণা চলছে, আরও তথ্য উপলব্ধ হলে আপনাকে আমরা অবগত করবো।

মূল তথ্যাবলী:

  • বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির হিসেবে কুতুপালং শিবির পরিচিত
  • মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বসবাস করে এখানে
  • ১৯৯১ সালে শিবিরটি অস্থায়ীভাবে গঠিত হয়
  • ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা সংকটের পর শিবিরের জনসংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়
  • শিবিরের ভৌগোলিক অবস্থান ও অবকাঠামোগত দুর্বলতা বন্যা ও ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে
  • রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তরের প্রচেষ্টা চলছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।