লন্ডনের ইস্ট লন্ডন মসজিদ (ইস্ট লন্ডন মসজিদ - ELM): লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস বরোতে হোয়াইটচ্যাপেল ও অ্যাল্ডগেট ইস্টের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এটি লন্ডন মুসলিম সেন্টার এবং মারিয়াম সেন্টারের সাথে মিলিত একটি বিশাল মসজিদ কমপ্লেক্স, যা ৭,০০০ এর বেশি মুসল্লি ধারণ করতে সক্ষম। ১৯৮২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমা হামলার পর জমির উপর তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদটির নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৯৮৫ সালে সম্পন্ন হয়। এটি যুক্তরাজ্যের প্রথম মসজিদগুলির মধ্যে একটি যা আযান সম্প্রচারের জন্য লাউডস্পিকার ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছিল। পরবর্তীতে, ২০০২ থেকে ২০০৪ সালে ছয়তলা বিশিষ্ট লন্ডন মুসলিম সেন্টার এবং ২০০৯ সাল থেকে ২০০১৩ সালে নয়তলা বিশিষ্ট মারিয়াম সেন্টার নির্মাণ করা হয়। মারিয়াম সেন্টারে মহিলাদের জন্য আলাদা প্রার্থনা কক্ষ, শিক্ষা সুবিধা, ফিটনেস সেন্টার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই কমপ্লেক্সটি এখন পশ্চিম ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ।
ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইতিহাস: ২০শ শতাব্দীর শুরুতে লন্ডনে কোন মসজিদ না থাকলেও, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কোটি কোটি মুসলিম বাস করত। ৯ নভেম্বর ১৯১০ সালে রিটজ হোটেলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লন্ডন মসজিদ ফান্ড প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪০ সালে ৪৪৬-৪৪৮ কমার্শিয়াল রোডে তিনটি বাড়ি কিনে 'ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও ইসলামিক কালচার সেন্টার' হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। ১৯৭৫ সালে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ করলে, হোয়াইটচ্যাপেল রোডে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সৌদি আরবের রাজা ফাহদের ১১ লক্ষ পাউন্ড অনুদানসহ কুয়েত এবং ব্রিটেন সরকারের অনুদানে মসজিদটি নির্মিত হয়।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ এবং ঘটনা: মসজিদটি বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির সফরের সাক্ষী হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন প্রিন্স চার্লস, প্রিন্স উইলিয়াম, মক্কার প্রধান ইমাম শেখ আব্দুর রহমান আল-সুদাইস, বিভিন্ন মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত। মসজিদটিতে বিভিন্ন ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৯ সালে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে 'দ্য বিগ রিড' অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ২০১৫ সালে ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম আর্কাইভস চালু করা হয়। মসজিদটি কখনও কখনও সমকামিতা সম্পর্কে দ্বন্দ্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ করার কারণে সমালোচিত হয়েছে।