রুহুল আমিন মোল্লা

আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ পিএম

বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন: বাংলাদেশের এক অমর নায়ক

মোহাম্মদ রুহুল আমিন (জন্ম: ১৯৩৫ - মৃত্যু: ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন অসাধারণ বীর এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য তিনি সাতজন বীরের মধ্যে একজন হিসেবে ‘বীর শ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত হন।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন:

১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার বাঘপাঁচড়া (বর্তমানে রুহুল আমিন নগর) গ্রামে রুহুল আমিনের জন্ম। পিতার নাম আজহার পাটোয়ারী এবং মাতার নাম জোলেখা খাতুন। বাঘপাচঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আমিশাপাড়া কৃষক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে তিনি মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

সামরিক জীবন ও মুক্তিযুদ্ধ:

১৯৫৩ সালে রুহুল আমিন পাকিস্তান নৌবাহিনীতে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি করাচির নিকটবর্তী মানোরা দ্বীপে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন নৌঘাঁটিতে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি চট্টগ্রামের পি.এন.এস বখতিয়ার নৌঘাঁটিতে বদলি হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে, রুহুল আমিন চট্টগ্রাম নৌঘাঁটি থেকে পালিয়ে যান এবং গ্রামে ফিরে ছাত্র, যুবক ও সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। পরে ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে আগরতলা সেক্টরে যোগদান করেন এবং মেজর শফিউল্লাহর অধীনে ২ নম্বর সেক্টরে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠনের পর তিনি কলকাতায় ১০ নং নৌ সেক্টরে যোগদান করেন।

শহীদ হওয়া:

১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ খুলনার মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌঘাঁটি দখলের অভিযান চলাকালীন, ভারতীয় বিমানের ভুলবশত গোলাবর্ষণে গুরুতর আহত হন রুহুল আমিন। তিনি জাহাজ ত্যাগ করেন নি এবং জাহাজ রক্ষার চেষ্টা করেন। আহত অবস্থায় তিনি রূপসা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং তীরে পৌঁছানোর পর রাজাকারদের হাতে শহীদ হন। তার মৃতদেহ রূপসা নদীর তীরে বাগমারা গ্রামে দাফন করা হয়।

সম্মাননা:

বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাকে মরণোত্তর বীর শ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করেন। তার নামে রো-রো ফেরি, চট্টগ্রামের একটি স্টেডিয়াম এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজের নামকরণ করা হয়েছে। তার জন্মস্থান বাঘপাঁচড়া গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে রুহুল আমিন নগর।

উল্লেখ্য: প্রদত্ত পাঠ্যে রুহুল আমিন মোল্লা নামে আরও একজন ব্যক্তির উল্লেখ রয়েছে যিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই দুই রুহুল আমিন আলাদা ব্যক্তি। বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের বিস্তারিত জীবনী উপরোক্ত বর্ণনায় দেওয়া হয়েছে।

একটি রুহুল আমিন মোল্লা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে মৃত্যুবরণ করেন। অন্য রুহুল আমিন হলেন মুক্তিযুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠ। এই তথ্যের পার্থক্য বুঝতে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর শহীদ।
  • তিনি ১৯৩৫ সালে নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন।
  • তিনি পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন।
  • মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতার জন্য তিনি বীর শ্রেষ্ঠ উপাধি লাভ করেন।
  • ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ খুলনায় রাজাকারদের হাতে তিনি শহীদ হন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - রুহুল আমিন মোল্লা

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

রুহুল আমিন মোল্লা মামলাটি দায়ের করেছেন।

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

রুহুল আমিন মোল্লা ফায়ার ফাইটারের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।