চাঁদপুর নদীতে ৭ খুনের ঘটনার আসামি: মো. ইরফান
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে অবস্থিত ‘এমভি আল-বাকিরা’ নামক একটি কার্গো জাহাজে ৭ জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মো. ইরফান নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ইরফান ওই জাহাজে খালাসি হিসেবে কাজ করতেন। তিনি আকাশ মণ্ডল নামেও পরিচিত।
ঘটনার বিবরণ:
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ২২ তারিখ রাত থেকে ২৩ তারিখ দুপুরের মধ্যে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ঈশানবালা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। জাহাজটিতে ইউরিয়া সার বোঝাই ছিল। মোট ৯ জন কর্মী ছিলেন জাহাজটিতে। হত্যাকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে জাহাজের মাস্টার, গ্রিজার, লস্কর, ইঞ্জিনচালক ও রান্নাঘরের কর্মীরা ছিলেন। একজন জাহাজের কর্মচারী, জুয়েল, গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হন এবং তিনি ঘটনার বর্ণনা দেন। তার বর্ণনা অনুযায়ী, ইরফানই হত্যাকাণ্ডের পিছনে মূল অভিযুক্ত।
ইরফানের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ:
২৫ ডিসেম্বর র্যাব ইরফানকে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান জানান, বেতন-ভাতা সংক্রান্ত বিরোধ ও রাগের কারণে তিনি এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। তিনি নিহতদের রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন এবং পরে তাদের হত্যা করেছিলেন।
অন্যান্য তথ্য:
- ইরফানের আসল নাম আকাশ মণ্ডল।
- তিনি ভৈরবে নৌযানে কর্মরত অবস্থায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
- ইরফানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক স্থান পরিদর্শন করে।
- ইরফান হত্যাকাণ্ডের পর একটি নতুন জ্যাকেট কিনে পরেন ও ডিম-খিচুড়ি খান।
তদন্ত:
এই ঘটনার তদন্তে শ্রম মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত এখনও চলমান। ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তাক্ত কুঠার, ফোল্ডিং চাকু, মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও অন্যান্য জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়। জাহাজটিতে কোনো সিসি ক্যামেরা ছিল না।
জুয়েলের সাক্ষ্য:
জুয়েলের সাক্ষ্য ঘটনার রহস্য উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি লিখিতভাবে ইরফানের নাম উল্লেখ করেছেন।
মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন:
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা ইরফানের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।
ধর্ম: মুসলিম (ধর্মান্তরিত)
বয়স: ২৬ বছর