বাংলাদেশে মাদক ব্যবসা একটি ব্যাপক সমস্যা, যা জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি। এই ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গকে আমরা মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে চিনি। এরা বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করে - কিছু শীর্ষ ব্যবসায়ী (গডফাদার) আছে যারা মাদকের আমদানি ও বিতরণ ব্যবস্থার নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে আছেন মধ্যস্থতাকারী, যারা মাদকের চালান সরবরাহ করেন এবং খুচরা বিক্রেতারা, যারা মাদকসেবীদের কাছে বিক্রি করে।
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গেছে যে, মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে র্যাব-৬ একটি যাত্রীবাহী বাসে অভিযান চালিয়ে মোছাঃ আরিফা নামে এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে ১৯০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে (২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪)। আবার, যশোর অঞ্চলে ৮ টি উপজেলায় ১০০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে শনাক্ত করে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৩ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৩৫০০ এর বেশি সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের জীবনবৃত্তান্ত, সমাজে অবস্থান এবং মাদকের সরবরাহের পদ্ধতি বিশ্লেষণ করে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, করোনা মহামারীর সময় মাদক ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে মাদক সরবরাহ করতো।
বিভিন্ন অভিযানে ইয়াবা, গাঁজা, আইস, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক জব্দ হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হওয়ায় মাদক নিয়ন্ত্রণে অভিযানের সফলতা সীমিত। মাদকের চাহিদা কমিয়ে আনা এবং মাদকের উৎস বন্ধ করার উপর জোর দেওয়ার প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমেও মাদক পাচার রোধ করা সম্ভব।