হাজী মুহাম্মদ মহসিন: শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক ও দানবীরের অমর কীর্তি
বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে হাজী মুহাম্মদ মহসিন এক অমূল্য নাম। তার দানশীলতা ও শিক্ষার প্রতি অগাধ ভালোবাসা চট্টগ্রাম ও খুলনার অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূলে স্থাপিত। ১৮৭৪ সালে চট্টগ্রাম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার জগতে তার অবদানের সূচনা। পরবর্তীতে এই মাদ্রাসাই ‘মহসিন কলেজ’ নামে পরিচিতি পায়। ৩১ একর জমির উপর অবস্থিত এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে পঠন-পাঠন কার্যক্রম চলে। ২০০০, ২০০২ এবং ২০০৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কলেজের মর্যাদা অর্জন করে মহসিন কলেজ।
মহসিনের দানশীলতা খুলনার দৌলতপুর মহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায়ও স্পষ্ট। ১৮৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয় খুলনা জেলার প্রথম হাইস্কুল। মহসিনের জমিদারির অর্থানুকূল্যে গড়ে ওঠা এই বিদ্যালয়ের শুরুর দিকের ছাত্রদের মধ্যে অনেকই দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সৈয়দ নওশের আলী, ফণিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, আবদুল হামিদ, সরোয়ার জাহান, বাঙ্গাল আবু সাঈদ, কাজী আবদুল খালেক, খগেন্দ্রনাথ বসু, এস.এম শহীদুল্লাহ, গোলাম মুস্তফা, শেখ ইসমাইল হোসেন, শ্যামল চট্টোপাধ্যায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক এই বিদ্যালয়ের খ্যাতনামা প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এখানে কিছুদিন শিক্ষকতাও করেছিলেন।
মহসিনের দানশীলতা ও শিক্ষার প্রতি অবদান শুধুমাত্র এই দুটি প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তার উদারতা অন্যান্য অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নেও অবদান রেখেছে। তাই, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অগ্রগতিতে হাজী মুহাম্মদ মহসিনের অমূল্য অবদান সর্বদাই স্মরণীয় থাকবে।