ভোট: গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি
ভোট, গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি, কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যম। এটি একটি সভা, সমিতি, কিংবা নির্বাচনী এলাকায় মতামত প্রকাশের একটি পদ্ধতি। আলোচনা, বিতর্ক ও প্রচারণার পর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়, ভোটের মাধ্যমেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন এবং নির্দিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন। ভোটদানের অধিকারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের 'ভোটার' বলা হয়।
ভোটগ্রহণের পদ্ধতি বিভিন্ন। ব্যালট, মৌখিক, হাত তোলা, ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পারে। আনুষ্ঠানিক ভোটগ্রহণ সাধারণত ব্যালটের মাধ্যমে হয়, যেমন কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য নির্বাচন। অনানুষ্ঠানিকভাবে হাত তোলা অথবা মৌখিক পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হতে পারে।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনে, নির্বাচকমণ্ডলী তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে সরকার গঠনে অংশগ্রহণ করে। অধিকাংশ প্রার্থী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হলেও, অনেকে নির্দল হিসাবেও দাঁড়ায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট, ভারতের কংগ্রেস ও বিজেপি, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যেই নির্বাচন বেশি প্রতিযোগিতামূলক হয়।
সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট, একই প্রার্থীর পক্ষে বেশিরভাগ ভোট। অনেক দেশ জয়লাভ করা কেন্দ্র সংখ্যার ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারণ করে। যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি কেন্দ্র জয়ী ব্যক্তিই বিজয়ী হন, যার সবসময় সর্বাধিক স্বতন্ত্র ভোট থাকে না। গোপন ব্যালট নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাধারণ। ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম ভারত, ব্রাজিল, ফিলিপাইনে ব্যবহৃত হয়। ভোটদান ঐচ্ছিক বা বাধ্যতামূলক। অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনায় ভোটদান বাধ্যতামূলক।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। মাল্টি-অপশন ভোটিং, দুই-রাউন্ড ভোটিং, অল্টারনেটিভ ভোট, একক স্থানান্তরযোগ্য ভোট, অনুমোদন ভোট, বোর্ডা কাউন্ট, এবং কনডরসেট নিয়ম। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের জন্য বিভিন্ন নির্বাচনী ব্যবস্থা আছে।
একক ভোট প্রতি প্রতিযোগিতায় ভোট বিভাজনের সমস্যা থাকতে পারে। দুই-দফা নির্বাচন, instant-runoff voting এই সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। একাধিক ভোট, র্যাঙ্কড ভোট, স্কোর ভোট পদ্ধতিও ব্যবহৃত হয়।
ভোটের ফলাফল বেশ সংবেদনশীল। রাজনৈতিক উত্তেজনা, সহিংসতা এমনকি গৃহযুদ্ধও হতে পারে। অ্যারোর অসম্ভবতা উপপাদ্য বলে যে কোন ভোটিং পদ্ধতিই পুরোপুরি সুষ্ঠু নয়।
২০১৯ সালে, ভারতে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে টুইটার ভোটারদের বিভ্রান্তিকর টুইট রিপোর্ট করার সুবিধা যোগ করে। না-সূচক ভোট বা নেগেটিভ ভোটিং একটি বিকল্প। প্রক্সি ভোটিংও আরেকটি পদ্ধতি। দক্ষিণ আফ্রিকার ভোটবিরোধী আন্দোলনও উল্লেখযোগ্য।
ফাঁকা ভোট, কোন প্রার্থীকে সমর্থন না করে ভোটদান। সাধারণ নাগরিকদের কার্যকর ভোট দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য আছে কিনা প্রশ্ন উঠে। ধর্মীয় গোষ্ঠীর কিছু অংশ রাজনীতিতে ভোটের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করে না।
ভোট গ্রহণের বিভিন্ন পদ্ধতি: কাগজের ব্যালট, মেশিন ভোট, অনলাইন ভোট, পোস্টাল ভোট, খোলা ব্যালট, মার্বেল ভোট, প্রক্সি ভোট ইত্যাদি। ভোটদানের নীতি ও পদ্ধতি বিভিন্ন দেশে ভিন্ন।
ভোট গণতন্ত্রের প্রাণ। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সুন্দর ও সুসংহত করার চেষ্টা চলতে থাকে।