বেড়া উপজেলা, পাবনা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এর অবস্থান উত্তরবঙ্গের নদীনালায় ঘেরা একটি অঞ্চলে। জনশ্রুতি অনুযায়ী, আরবি ‘বেড়ুহা’ শব্দ থেকে ‘বেড়া’ নামের উৎপত্তি। এর পূর্ব নাম ছিল শম্ভুপুর, যা খ্রিস্ট জন্মের পূর্ব থেকেই জনবসতির কেন্দ্র ছিল। নৌপথে জলদস্যুদের আক্রমণ ও প্রবল নদীর স্রোত এড়িয়ে বেড়া নিরাপদ পোতাশ্রয় হিসেবে পরিচিতি পায়। ৮০০ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে আরব বণিকরা এখানে বাণিজ্য কেন্দ্র স্থাপন করে। সুলতানি আমলে দুর্ভিক্ষের সময়, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে বেড়ার বন্দরের মাধ্যমে আরব দেশে পাঠানো হতো। ইংরেজ শাসনামলে, ১৮২৮ সালে যমুনার পশ্চিম উপকূলে ‘মথুরা’ থানার স্থাপনার পর বেড়া প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্ব পায়। ১৯৬০ সালে বেড়া উন্নয়ন সার্কেল গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
বেড়া উপজেলার আয়তন প্রায় ২৪৮.৬০ বর্গকিলোমিটার। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ২৩১,৪৩০ জন, যার মধ্যে পুরুষ ১২০,৬১৫ জন এবং মহিলা ১১০,৮১৫ জন। ২০০১ সালে জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল ৯৩১ জন প্রতি বর্গ কিলোমিটার। তবে ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী বর্তমান জনসংখ্যা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
বেড়া উপজেলায় পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন রয়েছে। এখানে ৬টি নদী আছে: গঙ্গা, ইছামতি, যমুনা, বাদাই, আত্রাই এবং হুরাসাগর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদ্রাসা। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার বিস্তারিত তথ্যও এখনও পাওয়া যায়নি। আরও তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে আপনাদের জানানো হবে।
বেড়া উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। এখানে ধান, পাট, সরিষা, বাদাম, তৈলবীজ, ইত্যাদি ফসল চাষ হয়। বেড়ার ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও নদীনালায় ঘেরা অবস্থান একে অনন্য করে তুলেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বেড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। চরপাড়া ও দয়ালনগরে বধ্যভূমি ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়াও, নগরবাড়ী ফেরিঘাট, পাইকরহাটি ইত্যাদি স্থানে মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। বেড়া উপজেলার আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে পরবর্তীতে আপডেট করা হবে।