বাংলাদেশে বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) বলতে সাধারণত প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদের পরিমাণ বোঝায়। উল্লেখ্য যে, বিসিএফ-এর ব্যবহার গ্যাসক্ষেত্রের মজুদ পরিমাণ নির্দেশ করার জন্য সাধারণ। এই নিবন্ধে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসক্ষেত্রের তথ্য দেওয়া হলো।
কামতা গ্যাসক্ষেত্র: গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত কামতা গ্যাসক্ষেত্র ১৯৮২ সালে পেট্রোবাংলা আবিষ্কার করে। এই ক্ষেত্রের মোট পুনরুদ্ধারযোগ্য গ্যাস মজুদ ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ১৯৮৪ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলেও অত্যধিক পানি উৎপাদনের কারণে ১৯৯১ সালে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ২৬ আগস্ট, ১৯৯১ পর্যন্ত মোট ২১.১০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হয়েছিল। ভবিষ্যতে নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে।
নরসিংদী গ্যাস ফিল্ড: ঢাকা থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে নরসিংদীতে অবস্থিত এই গ্যাস ফিল্ডটি ১৯৯০ সালে পেট্রোবাংলা আবিষ্কার করে। এর মোট উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের পরিমাণ ৩৪৫ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ১৯৯৬ সাল থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন চলছে। নভেম্বর ৩০, ২০২৪ পর্যন্ত ২৫৫.৬১৪ বিলিয়ন ঘনফুট (৭৪.০৯%) গ্যাস উৎপাদন হয়েছে।
বেগমগঞ্জ-৪ (ওয়েস্ট) কূপ: নোয়াখালীর এই কূপে প্রায় ১৮০ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের মতে, দৈনিক ১০-১৫ মিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলন করে ২০-২৫ বছর গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। কূপটির খনন কাজ শুরু হয় ২৯ এপ্রিল, ২০২৪।
বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্র: এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র। প্রমাণিত মজুদ ৭ হাজার ৮৪ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। জাতীয় গ্রিডে সরবরাহকৃত গ্যাসের প্রায় ৩৪% আসে এখান থেকে। শেভরন কর্তৃক পরিচালিত। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রতিবেদনে উল্লেখিত মজুদ ও উত্তোলনের তথ্যের উপর ভিত্তি করে, বিবিয়ানা থেকে অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত সরবরাহ অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। শেভরন বিবিয়ানায় নতুন কূপ খননসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
মেঘনা গ্যাস ফিল্ড: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে অবস্থিত এই ক্ষেত্রের উত্তোলনযোগ্য মজুদ ১০১ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ)। ১৯৯৭ সালে উৎপাদন শুরু হলেও অত্যাধিক পানি উৎপাদনের কারণে বেশ কিছু সময় উৎপাদন বন্ধ ছিল। বর্তমানে গড়ে দৈনিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রতিটি ক্ষেত্রের তথ্য নির্দিষ্ট সময়ের উপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে উৎপাদন ও মজুদের পরিবর্তন ঘটতে পারে। আমরা ভবিষ্যতে আরো আপডেট তথ্য যুক্ত করবো।