বীর উত্তম বদিউল আলম: স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অসাধারণ নায়ক
৩০ অক্টোবর, ১৯৪৬ সালে জন্মগ্রহণকারী বদিউল আলম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন অসামান্য বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার সাহসিকতা ও দেশপ্রেমের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব প্রদান করে। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রামপুরা গ্রামে মোজাম্মেল হক সরকার ও রাবেয়া খাতুনের সন্তান বদিউল আলমের স্ত্রীর নাম শাহনাজ কাওছার। তার এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি ফ্রান্সের তুলন নৌঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। সেখান থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বদিউল আলমের নেতৃত্বে মংলা ও চালনা বন্দর অপারেশনে অংশগ্রহণ ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তবে ১৬ আগস্ট, ১৯৭১ খুব ভোরে চাঁদপুর নৌবন্দরে তার নেতৃত্বাধীন নৌ-কমান্ডোদের সাহসী অভিযান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা। ২০ জন নৌ কমান্ডো নিয়ে গোপনে চাঁদপুর নৌবন্দরে অভিযান চালিয়ে তারা ছয়টি জাহাজ, পন্টুন ও বার্জে লিম্পেট মাইন বসিয়ে ধ্বংস করে দেয়। মেঘনা-ডাকাতিয়া নদীর প্রতিকূল পরিবেশে এই অভিযান সফল করার জন্য তাঁর সাহসিকতা ও নেতৃত্বগুণ অতুলনীয়।
স্বাধীনতার পর বদিউল আলম নৌবাহিনীর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ঢাকার ব্রিটিশ হাইকমিশনে এবং পরে জনতা ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তার জীবন এক অসাধারণ উদাহরণ দেশপ্রেম ও সাহসিকতার। বীর উত্তম বদিউল আলমের নাম সর্বদা বাংলাদেশের ইতিহাসে উজ্জ্বল অক্ষরে লেখা থাকবে।