পুলহাট গুদামে সার বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) দিনাজপুর অঞ্চলের যুগ্ম পরিচালক (সার) শওকত আলীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ডিলারদের অভিযোগ, শওকত আলী ঘুষ ছাড়া ডিলারদের নামে সার বরাদ্দ দেন না। ঘুষ না দিলে সার উত্তোলনের ডিও লেটারে স্বাক্ষর করার নামে তাদের হয়রানি করা হয়। গুদামে সার ঢোকানো ও বের করার শ্রমিকদের বিল থেকেও তিনি ঘুষ নেন, না দিলে গুদামে সার সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এই দুর্নীতির প্রভাব পড়ছে কৃষকদের উপরও; অধিকাংশ ডিলার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছে। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে শওকত আলী প্রতি বস্তা সার বরাদ্দে ৬০ টাকা ঘুষ দাবি করছেন। গত ২ নভেম্বর ভুক্তভোগী ডিলাররা বিএডিসি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, শওকত আলী বিভিন্ন অজুহাতে উৎকোচ আদায় করেন, সার উত্তোলনের সময় টাকা না দিলে দূরবর্তী গুদাম থেকে সার নিতে বাধ্য করেন। প্রতি বস্তা সারের জন্য তিনি ৮০-১০০ টাকা (টিএসপি), ৬০-৮০ টাকা (ডিএপি) এবং ২০ টাকা (এমওপি) ঘুষ নেন। সার রিকাউন্টিংয়ের ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়েও তিনি অর্থ আত্মসাৎ করেন। পার্বতীপুরে সার গুদাম ও প্রাচীর নির্মাণেও তার অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এক মৌসুমে ২০ হাজার মেট্রিক টন সার বরাদ্দ হলে, ৬০ টাকা করে ঘুষ আদায়ে ২ কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাৎ হয় বলে অভিযোগ। পুলহাট গুদামের শ্রমিক সর্দার করিমুল হক বাচ্চুও শওকত আলীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, টাকা না দেওয়ায় নভেম্বর মাসে তাদের গুদামে কোনো সার আসেনি এবং ২৫ শ্রমিক কাজবিহীন হয়ে পড়েছে। বিএডিসি বীজ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের দিনাজপুর শাখার সভাপতি মির্জা লিয়াকত আলী বেগ এই অনিয়মের বিষয়ে বিএডিসি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। কৃষকরাও বাড়তি দামে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। শওকত আলী সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলহাট গুদাম
মূল তথ্যাবলী:
- বিএডিসি কর্মকর্তা শওকত আলীর বিরুদ্ধে পুলহাট গুদামে সার বিতরণে দুর্নীতির অভিযোগ।
- ঘুষ ছাড়া সার বরাদ্দ দেওয়া হয় না বলে ডিলারদের অভিযোগ।
- কৃষকদের উপর দুর্নীতির প্রভাব পড়ছে, বাড়তি দামে সার কিনতে হচ্ছে।
- পুলহাট গুদামের শ্রমিকরাও ঘুষের শিকার।
- বিএডিসি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।