১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত বিতর্কিত ও নিন্দনীয়। তাদের হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, গণহত্যা এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। এই নিবন্ধে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড, তাদের আত্মসমর্পণ এবং এর পরবর্তী ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনা করব।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার: মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ধরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর বর্বরোচিত অত্যাচার চালিয়েছে। তাদের হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, গণহত্যা, গ্রামে গ্রামে অগ্নিসংযোগ এবং অমানবিক অত্যাচারের বর্ণনা ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কের স্মৃতি হিসেবে রয়ে গেছে। এই অত্যাচারের শিকার হয়েছে লাখ লাখ নিরীহ মানুষ। রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস এর মত সহযোগী বাহিনীর সাথে মিলে তারা অত্যাচার চালিয়েছে।
আত্মসমর্পণ: ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়াদী উদ্যান) পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পূর্ব অঞ্চলের সেনাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজী মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ আত্মসমর্পণের ঘটনা ছিল। প্রায় ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে।
বুদ্ধিজীবী হত্যা: আত্মসমর্পণের আগে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ শত শত বাঙালি বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। রায়েরবাজার বধ্যভূমি এই অমানবিক হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে আছে।
পরিণতি: পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের ফলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে তাদের চালানো অত্যাচার ও বর্বরোচিততার জন্য দায়ীদের বিচার করা এবং শান্তি স্থাপন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।