তুহিন তরফদার: বাংলাদেশের কাবাডি তারকা
বাংলাদেশের কাবাডি দলের অধিনায়ক তুহিন তরফদার দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একজন উঠতি তারকা। বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার চরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা তুহিনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গ্রামীণ পরিবেশে। তার বাবা সিদ্দিকুর রহমান তরফদারের একটি মুদির দোকান ছিল। তুহিনের ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল, কিন্তু গ্রামে কাবাডিও খেলতেন তিনি। তার বাবা কাবাডি খেলতেন কিন্তু অনেক চোট পাওয়ার কারণে তুহিনকে কাবাডি খেলতে নিষেধ করতেন। তবুও তুহিন বাবার অজান্তে কাবাডি খেলতে থাকতেন।
তুহিনের হাডুডু খেলা দেখে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাকে খেলোয়াড় কোটায় চাকরি দেন। ২০১৬ সালে তিনি এসএ গেমসের মাধ্যমে জাতীয় দলে স্থান পান। তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কাপে ঘরের মাঠে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তুহিন মাশরাফি বিন মুর্তজাকে তার আদর্শ হিসেবে মানেন। সাকিব আল হাসান ও জামাল ভূঁইয়াও তাঁর প্রিয় ক্রীড়াবিদ।
কাবাডি খেলা থেকে তুহিনের আয়ের একটা বড় অংশ আসে। তিনি এখনও গ্রামে হাডুডু খেলে এবং ম্যাচপ্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত পান। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর করপোরাল পদে কর্মরত আছেন এবং ঢাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন।
ভারতের প্রো কাবাডিতে তিনবার ডাক পেয়েছেন তুহিন, কিন্তু খেলার সুযোগ পাননি। তিনি জাতীয় খেলার অবহেলার প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং কাবাডিকে আরও বেশি পৃষ্ঠপোষণ দিয়ে জনপ্রিয় করার আহ্বান জানান। তুহিনের পরিকল্পনা আছে খেলা ছেড়ে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার।
তুহিন তরফদার কেবল একজন কাবাডি খেলোয়াড় নন, তিনি একজন দেশপ্রেমিক যিনি দেশের কাবাডি খেলার উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন এবং ভবিষ্যতেও কাজ করে যাবেন। তিনি দেশের জন্য বিশ্বকাপে লাল-সবুজের পতাকাকে উঁচুতে তুলে ধরার বার্তা দিয়েছেন। তুহিন তরফদারের জীবনী একজন সাধারণ গ্রামীণ যুবক থেকে একজন জাতীয় ক্রীড়া তারকায় পরিণত হওয়ার অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প।