জামায়াতে ইসলামী: একটি বিশ্লেষণ
জামায়াতে ইসলামী একটি ইসলামি রাজনৈতিক দল, যা ১৯৪১ সালে ব্রিটিশ ভারতে সৈয়দ আবুল আ’লা মওদুদীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়। মূলতঃ ইসলামী আদর্শে পরিচালিত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে এ দলের যাত্রা শুরু হয়। মওদুদী তারজুমানুল কোরআন নামক মাসিক পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৩২ সাল থেকেই ইসলামী আদর্শের প্রচার-প্রসার শুরু করেন। ১৯৪০ সালে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া ‘ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার পথ’ শীর্ষক বক্তৃতায় তিনি মুসলিম লীগের সাথে তার মতপার্থক্য প্রকাশ করেন। এরপর ১৯৪১ সালের ২৬ আগস্ট লাহোরে জামায়াতে ইসলামীর আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠা ঘটে।
ভারত বিভাগের পর দলটি ভারত ও পাকিস্তানে পৃথক শাখায় বিভক্ত হয়। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়ে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ দলটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও পরবর্তীতে পুনরায় রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৯ সালে ধর্মভিত্তিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ পুনরায় রাজনৈতিক দৃশ্যপটে ফিরে আসে।
১৯৯০-এর দশক থেকে জামায়াত বিভিন্ন জোটের সাথে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং ক্ষমতায় অংশীদারিত্বও করে। তবে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিচার এবং দণ্ড প্রদান অনেক বিতর্কের সৃষ্টি করে। এই বিতর্ক জামায়াতের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে।
জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড, তার মতাদর্শ, এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সহ বিভিন্ন দিক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক ও আলোচনা চলে আসছে।