গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এই আন্দোলন জনসাধারণের দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভের এক প্রকাশ বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। অর্থনৈতিক মন্দা, দুর্নীতি, বৈষম্য, এবং গণতান্ত্রিক অধিকারের অভাব - এসব কারণে জনগণের মনে ক্ষোভ জমেছিল, যা কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আকার ধারণ করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিও জনগণের ক্ষোভ ছিল। সরকারের দমন-পীড়নের নীতি এই আন্দোলনকে আরও তীব্র করে তুলেছিল।
প্রাথমিকভাবে ছাত্রদের কোটা সংস্কারের দাবী নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু হলেও, পরবর্তীতে সরকারের দমন নীতির কারণে পরিস্থিতি হিংসাত্মক হয়ে উঠে। আন্দোলনের চলাকালীন ইন্টারনেট বন্ধ এবং কারফিউ জারি করা হয়। আন্দোলন সহিংসতায় রূপান্তরিত হওয়ার কারণে ব্যাপক জনহানি ঘটে।
আন্দোলন শেষে সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে এবং হাজার হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তবে, এই পদক্ষেপের ফলে জনসাধারণের মনে সন্তুষ্টি তৈরি হয়নি, বরং গণগ্রেপ্তার এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠে।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং পলায়নের পর ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়েও জনমত বিভক্ত। কিছু মহলে ধারণা আছে যে, ভারত আওয়ামী লীগকে সমর্থন করার কারণে জনসাধারণের ক্ষোভের শিকার হয়েছে। আরও কিছু মহল মনে করেন যে ভারতকে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
এই ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সকল পক্ষের মধ্যে আলোচনা এবং বোঝাপড়া অপরিহার্য বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। জনগণের ক্ষোভের মূলে থাকা কারণগুলি সনাক্ত করে সমাধান উপায় খোঁজার মাধ্যমে এই সংকট দূর করা জরুরি। এর জন্য সরকারের সহযোগিতা, গণমাধ্যমের সঠিক প্রচার এবং জনগণের মধ্যে বিশ্বাস পুনঃস্থাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।