গাইবান্ধা সদর উপজেলা

আপডেট: ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২:২১ এএম
নামান্তরে:
Gaibandha Sadar Upazila
গাইবান্ধা সদর উপজেলা

গাইবান্ধা সদর উপজেলা: রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার অন্যতম প্রধান উপজেলা। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ এই উপজেলাটির বিস্তৃত ইতিহাস, ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, অর্থনীতি এবং উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো।

ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা: গাইবান্ধা সদর উপজেলার আয়তন ৩২৪.০৫ বর্গ কিলোমিটার। উত্তরে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা এবং কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলা, দক্ষিণে পলাশবাড়ী, সাঘাটা এবং ফুলছড়ি উপজেলা, পূর্বে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ও ফুলছড়ি উপজেলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ, পশ্চিমে সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা অবস্থিত।

ইতিহাস: ১৮৫৭ সালে গাইবান্ধা থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে গাইবান্ধা জেলা প্রতিষ্ঠার পর এটি উপজেলা হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গাইবান্ধা সদর উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২৭ আগস্ট, ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা বদিয়াখালী সড়ক সেতু অপারেশনের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীদের প্রতিহত করে। ৯ ডিসেম্বর, বীর প্রতীক মাহবুব এলাহী রঞ্জুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা গাইবান্ধা শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতা প্রাঙ্গনে (সাবেক এসডিও মাঠ) প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে।

জনসংখ্যা ও জনসংখ্যার ঘনত্ব: ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী, গাইবান্ধা সদর উপজেলার জনসংখ্যা ৪,৩৭,২৬৮ জন। পুরুষ ২,১৩,৪৮৬ জন এবং মহিলা ২,২৩,৪৫৭ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১২২৫ জন। সাক্ষরতার হার ৪৭.৫%।

অর্থনীতি: গাইবান্ধা সদর উপজেলায় বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই। তবে ক্ষুদ্র শিল্প বিসিক শিল্প নগরীতে স্থাপিত হয়েছে। জনগোষ্ঠীর মাথাপিছু আয় তুলনামূলকভাবে কম। কৃষি এখানকার জনগোষ্ঠীর প্রধান পেশা। ধান, পাট, গম, আলু, সরিষা, মসুর ডাল, চিনা বাদাম, ভুট্টা, পিঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি প্রধান কৃষি ফসল।

শিক্ষা: উপজেলায় ১০টি কলেজ, ৫৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৮টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবং অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫), গাইবান্ধা কলেজ (১৯৪৭) উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রশাসন: গাইবান্ধা সদর উপজেলায় একটি পৌরসভা, ৯ টি ওয়ার্ড, ১৩৮ টি মৌজা এবং ১২৭ টি গ্রাম রয়েছে। লক্ষ্মীপুর, মালিবাড়ী, কুপতলা, সাহাপাড়া, বল্লমঝাড়, রামচন্দ্রপুর, বাদিয়াখালী, বোয়ালী, খোলাহাটী, ঘাগোয়া, গিদারী, কামারজানি, এবং মোল্লারচর ইউনিয়ন রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য স্থান: মীরের বাগান মসজিদ (১৩০৮), পীর ইবনে শরফুদ্দিনের মাযার, ভবানীগঞ্জ ডাকঘর (১৮৫৮), বাগুড়িয়া তহশিল অফিস (উনিশ শতক) গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। গাইবান্ধা পৌর পার্ক, মীরের বাগান বিনোদন কেন্দ্র।

তথ্যের পরিপূর্ণতা: এই লেখাটি প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। আরও বিস্তারিত তথ্য উপলব্ধ হলে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৮৫৭ সালে গাইবান্ধা থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত
  • ৩২৪.০৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন
  • ৪,৩৭,২৬৮ জন জনসংখ্যা (২০১১)
  • ৪৭.৫% সাক্ষরতার হার
  • কৃষি প্রধান পেশা
  • মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।