কে এম রফিকুল ইসলাম নামটি দুই ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারে। প্রথম ব্যক্তি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য বীর প্রতীক খেতাব লাভ করেছেন। দ্বিতীয় ব্যক্তি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট লেখক, নজরুল গবেষক, জাতীয় অধ্যাপক, এবং বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক। উভয় ব্যক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য নিচে তাদের পৃথকভাবে বর্ণনা করা হল:
কে এম রফিকুল ইসলাম (বীর মুক্তিযোদ্ধা):
এই কে এম রফিকুল ইসলাম (প্রকৃত নাম মো. রফিকুল আলম) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর পৈতৃক বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার গোপালনগর গ্রামে। তিনি ওয়াপদায় (পানি উন্নয়ন বোর্ডে) চাকরি করতেন এবং ১৯৭১ সালে ভেড়ামারা গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রকল্পে মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রতিরোধযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এপ্রিল মাসের শেষে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন এবং ৮ নম্বর সেক্টরের শিকারপুর সাবসেক্টরে যুদ্ধ করেন। তিনি একটি গেরিলা দলের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তার বাবার নাম আজাদ আলী খান (ওরফে আসাদ আলী খান) এবং মায়ের নাম মোছা. রাবেয়া খানম। তিনি মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হরিশংকর গ্রামে পাকিস্তানি সেনাদের সাথে যুদ্ধে শহীদ হন।
কে এম রফিকুল ইসলাম (জাতীয় অধ্যাপক):
এই রফিকুল ইসলাম (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৩৪ - মৃত্যু ৩০ নভেম্বর ২০২১) ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট লেখক এবং দেশের প্রথম নজরুল গবেষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও নজরুল-গবেষণা কেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে সম্মানিত হন। তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য ছিলেন। তিনি চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।