কালাইয়া হাট: পটুয়াখালীর একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসাকেন্দ্র
প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের ইতিহাসের সাথে জড়িত কালাইয়া হাট, বর্তমানে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার একটি বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র। ঐতিহাসিক সূত্র অনুসারে, চন্দ্রদ্বীপের রাজা 'কালাই' রাজ্যের দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত খালের পাড়ে এই ঘাট স্থাপন করেন, যেখানে দেশি-বিদেশী জাহাজ ভিড়তো। ক্রমে এটি একটি বাজারে পরিণত হয় এবং রাজার নামানুসারে 'কালাইয়া বাজার' নামে পরিচিতি লাভ করে। বর্তমানে এটি কালাইয়া বন্দর নামে পরিচিত, যার বয়স প্রায় ৪০০ বছর বলে অনুমান করা হয়।
কালাইয়া হাট সপ্তাহে প্রতি সোমবার বসে। এটি দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী হাটগুলির মধ্যে একটি। এই হাটের সবচেয়ে বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এর গরু-মহিষের হাট, যা এ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ। পটুয়াখালীর দশমিনা, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, চরকাজল, ভোলা জেলার লালমোহন, নাজিরপুর, চরফ্যাশন, চরকলমি, কুকরি মুকরিসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা কালাইয়া হাটে গরু-মহিষ বিক্রয় করতে আসেন। আর চট্রগ্রাম, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, ঢাকাসহ দূর-দূরান্ত থেকে বড় ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে আসেন।
গরু-মহিষ ছাড়াও কালাইয়া হাটে ধানেরও একটি বৃহৎ কেন্দ্র। দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌপথে ধান আনা হয় এবং নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দূরবর্তী এলাকার ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ধান কিনে নিয়ে যান। এছাড়াও কালাইয়া হাটে বাঁশের কুলা, ডালা, মোড়া, খাঁচা, হোগলা পাতার পাটি, শামুকের খোলসের চুন, গাছের চারা সহ নানামুখী ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। এটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় স্পর্শিত হলেও, এখানে এখনো হুক্কা খাওয়ার উপকরণ বিক্রেতাদের দেখা মেলে।
সংক্ষেপে, কালাইয়া হাট পটুয়াখালীর একটি ঐতিহ্যবাহী ও জমজমাট ব্যবসাকেন্দ্র, যা শতাব্দী ধরে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আরও বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের জন্য আমরা অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহে কাজ করছি। আপনাদেরকে পরবর্তীতে আরো আপডেট দেওয়া হবে।