কদলপুর ইউনিয়ন: চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার একটি ঐতিহাসিক ইউনিয়ন
কদলপুর ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন। এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব, ভৌগোলিক অবস্থান এবং বর্তমান অবস্থা নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
ইউনিয়নের নামকরণের পেছনে রয়েছে চট্টগ্রাম বিজয়ী মহান মুসলিম বীর সেনাপতি কদল খান গাজীর নাম। ঐতিহাসিকদের মতে, কদল খান গাজীর স্মৃতি ধারণ করেই কদলপুর নামকরণ হয়। একসময় কদলপুর উত্তরে রাউজান খাল থেকে দক্ষিণে মহামুনি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তন:
রাউজান উপজেলার পূর্বাংশে অবস্থিত কদলপুর ইউনিয়নের আয়তন ৩৭৬০ একর (১৫.২২ বর্গ কিলোমিটার)। উত্তর-দক্ষিণে ৬ কিমি এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৫.৫ কিমি বিস্তৃত। উত্তরে রাউজান ইউনিয়ন, পশ্চিমে পূর্ব গুজরা ইউনিয়ন, দক্ষিণে পাহাড়তলী ইউনিয়ন এবং পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়ন অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার।
জনসংখ্যা ও শিক্ষা:
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কদলপুর ইউনিয়নের লোকসংখ্যা ২০,০৮২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৯,৩৮৫ জন এবং মহিলা ১০,৬৯৭ জন। সাক্ষরতার হার ৫৭.৮৩%। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ১টি ফাজিল মাদ্রাসা, ১টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং ৪টি কিন্ডারগার্টেন।
অন্যান্য তথ্য:
কদলপুর ইউনিয়নে ৪৫টি মসজিদ, ৭টি মন্দির এবং ৮টি প্যাগোডা রয়েছে। ১টি হাসপাতাল এবং ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা প্রদান করে। এখানে আশরাফ আলী চৌধুরী হাট এবং ঈশান ভট্টের হাট দুটি প্রধান বাজার। নোয়াখালীর আগা খাল, ঐতিহাসিক মগদাই খাল,সহ আরও কয়েকটি খাল ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম সিএনজি চালিত অটোরিক্সা।
উল্লেখ্যযোগ্য ব্যক্তিত্ব:
এই ইউনিয়ন থেকে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি বেরিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন: জিয়া উদ্দিন আহমদ বাবলু (সাবেক সংসদ সদস্য), মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী (বাংলাদেশের সাবেক মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক), আরও অনেকে।
কদলপুর ইউনিয়ন একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ এবং উন্নয়নশীল ইউনিয়ন, যার অগ্রগতির জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।