বাংলাদেশে আর্থিক অপরাধ: একটি ব্যাপক চিত্র
সম্প্রতি বাংলাদেশে ব্যাপক আর্থিক অপরাধের তদন্ত শুরু হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যৌথভাবে দেশের শীর্ষ ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর অবৈধ অর্থ অর্জন, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের তদন্ত করছে। তদন্তের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই শিল্পগোষ্ঠীগুলো দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি, প্রতারণা, এবং জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন এবং বিদেশে অর্থ পাচার করেছে।
তদন্তের আওতায় থাকা শিল্পগোষ্ঠী: এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ এবং সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ। দুদক ৬টি গ্রুপের এবং সিআইডি ৪টি গ্রুপের তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা শাখা, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) তদন্ত সমন্বয় করছে এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় আইনি সহায়তা দিচ্ছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ: সিআইডি'র তদন্তে বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে ১৮টি কোম্পানির মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে রপ্তানি মূল্য ফেরত না আনার মাধ্যমে অন্তত ১৩৫ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে সাতটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে ঋণ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এই অর্থ দুবাই, সিঙ্গাপুর এবং যুক্তরাজ্যে আবাসন খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। সালমান এফ রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের সৌদি আরবে একটি বড় ওষুধ কোম্পানি স্থাপনের বিষয়টিও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
বিএফআইইউ'র ভূমিকা: বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে, তথ্য সংগ্রহ করে এবং বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে। তারা আন্তর্জাতিকভাবে পাচারকৃত সম্পদ ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যান্য তথ্য: বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের বিদেশে থাকা সম্পদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এস আলম গ্রুপ চারটি ব্যাংক থেকে ঋণের নামে দেড় লাখ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। নাসা গ্রুপ ৪০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এই তদন্ত কার্যক্রম তীব্রতর হয়েছে।
আইনি দিক: অর্থ পাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের আইন সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তথ্য উল্লেখ করা হয়নি। বিএফআইইউ'র ভূমিকা, ক্ষমতা ও কার্যক্রমের বিস্তারিত আইনী দিক সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। তাই এই বিষয়ে আমরা আপনাকে পরবর্তীতে আরও তথ্য দিতে পারবো।
অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) অনুযায়ী বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে কাজ করে
বিএফআইইউ'র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে