আব্দুল্লাহিল কাফি

আপডেট: ৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২:০৫ এএম

আল্লামা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহেল কাফী আল-কোরায়শী (রহ:) (১৯০০-৪ জুন ১৯৬০) একজন বিশিষ্ট ইসলামি পণ্ডিত, বাঙালি রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন। তিনি সমাজসেবক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদ্রাসা ও ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার জন্ম বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বর্ধমান জেলার টুবগ্রামে, যদিও তার পৈতৃক নিবাস ছিল দিনাজপুর জেলার বস্তিয়াড়া গ্রামে। শৈশবে বাড়িতে আরবি, উর্দু ও ফারসি ভাষা শেখার পর তিনি নূরুল হুদা মাদ্রাসা, কৈলাসরঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয় এবং হুগলি জেলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯১৭ সালে কলকাতা মাদ্রাসা থেকে এন্ট্রান্স এবং ১৯১৯ সালে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য তিনি ইংরেজি শিক্ষা ত্যাগ করেন। জমিয়তে উলামায়ে বাঙ্গালার সহকারী সম্পাদক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টির সেক্রেটারি এবং নির্বাচন বোর্ডের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি মুসলিম ন্যাশনাল পার্টির নেতা হিসেবে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নেন এবং গ্রেফতার হন। ১৯৩২ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে তিনি ইসলামি কর্মে নিজেকে নিয়োজিত করেন। উত্তরবঙ্গ আহলে হাদিস সম্মেলন, নিখিল ভারত জাতীয়তাবাদি মুসলিম সম্মেলন, এবং নিখিল ভারত আহলে হাদিস সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ১৯৪৬ সালে নিখিল বঙ্গ ও আসাম জমঈয়তে আহলে হাদিসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর সংগঠনের নাম বদলে পূর্ব পাকিস্তান জমঈয়তে আহলে হাদিস (বর্তমানে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস) রাখা হয়। তিনি ইসলামি সংবিধান চালুর পক্ষেও মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি উর্দু দৈনিক জামানা, সাপ্তাহিক সত্যাগ্রহী, মাসিক তর্জমানুল হাদিস, এবং সাপ্তাহিক আরাফাত পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। তার লেখা ৫২টির বেশি বই বাংলা, আরবি, উর্দু, ইংরেজি ও ফারসি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৬০ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন এবং একই বছরে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার জীবন ও কর্মকাণ্ড ইসলামী চিন্তাধারা ও বাংলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ
  • ইসলামি পণ্ডিত, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও লেখক
  • অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলনে অংশগ্রহণ
  • আহলে হাদিস আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • ৫০ টির বেশি বই রচনা
  • ১৯৬০ সালে বাংলা একাডেমী পুরষ্কার লাভ
  • ১৯৬০ সালে মৃত্যুবরণ

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।