আইনজ্ঞ ও সাবেক বিচারকগণ: বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় তাদের ভূমিকা
এই নিবন্ধে বাংলাদেশের আইনজ্ঞ ও সাবেক বিচারকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংক্রান্ত বিতর্ক এবং বিচার ব্যবস্থায় তাদের অবদান এসব বিষয় নিয়ে এই নিবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ:
১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণের কথা উল্লেখ থাকলেও, বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগেছে। ১৯৯৫ সালের মাসদার হোসেন বনাম রাষ্ট্র মামলার রায়ের পর বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ২০০৭ সালের ১লা নভেম্বর বিচার বিভাগ পূর্ণাঙ্গভাবে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক হয়।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা:
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য বিচারকদের চাকুরির নিশ্চয়তা, বেতনের নিশ্চয়তা এবং আইন ও নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্তি অপরিহার্য। কিন্তু বাংলাদেশে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ, সংবিধানের কিছু ধারা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপের কারণে এই বিতর্ক চলমান থাকে। বিশেষ করে, ষোড়শ সংশোধনী ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এস. কে. সিনহার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা এই বিতর্কের প্রমাণ।
বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া:
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে। বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন সময়ে বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির পরামর্শ অগ্রাহ্য করেছে। সংবিধানের ৯৫ ও ১১৫ ধারায় বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তা পরিলক্ষিত হয়নি।
নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা:
অনেকের মতে, উচ্চ আদালত কিঞ্চিৎ স্বাধীন থাকলেও নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা নেই বললেই চলে। রাজনৈতিক প্রভাব, আইনজীবীদের তদবির, পুলিশ ও অন্যান্য বিষয় নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা খর্ব করে।
বিচার বিভাগের সংস্কার:
বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য মন্টেস্কুর ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির পরিপূর্ণ কার্যকারিতা প্রতিষ্ঠা, মামলাজট কমানো, নিম্ন আদালতের বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধি, সুপ্রীম কোর্টে অধিকসংখ্যক বিচারপতি নিয়োগ, বিচারকদের অপসারণ ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার সংস্কার, আইনজীবীদের পেশাগত উন্নয়ন ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নিবারণ প্রয়োজন।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ:
- মোস্তফা কামাল (সাবেক প্রধান বিচারপতি)
- মাসদার হোসেন (বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ সংক্রান্ত মামলার বাদী)
- এস. কে. সিনহা (সাবেক প্রধান বিচারপতি)
- কামাল উদ্দিন হোসেন (প্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান)
- মাহমুদুল ইসলাম (সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল)
- মো. আবদুল মতিন (আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি)
- শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান (সাবেক আপিল বিভাগের বিচারপতি)
স্থান:
- ঢাকা
- নারায়ণগঞ্জ
- চট্টগ্রাম
- কলাবাগান
- শাপলা চত্ত্বর
সংগঠন:
- ল' ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ
- আইন কমিশন
- ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ
- ব্র্যাক
ট্যাগ:
বিচার বিভাগ, বিচার ব্যবস্থা, আইনজ্ঞ, বিচারক, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবিধান, মাসদার হোসেন মামলা, ষোড়শ সংশোধনী, আইন পেশা, ন্যায়বিচার