হোদেইদাহ

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫:৫৬ পিএম

হোদেইদাহ: ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর

আল-হুদায়দাহ (আরবি: الْحُدَيْدَة), হোদেদা, হোদেইদা, হুদাইদা বা হোদেইদাহ নামেও পরিচিত, হল ইয়েমেনের চতুর্থ বৃহত্তম শহর এবং লোহিত সাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। ২০২৩ সালের হিসাবে, এর জনসংখ্যা প্রায় ৭৩৫,০০০। ইসলামি সময়পঞ্জীতে ১৪৫৪/৫৫ সালে এর প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। অটোমানদের আমলে ১৫২০-এর দশকে শহরটির গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। ১৮৩০-এর দশকে ইব্রাহিম পাশার সেনাবাহিনী এটি নিয়ন্ত্রণ করতো, পরে তারা এর দায়িত্ব শেরিফ হুসাইন ইবন আলী হায়দরের কাছে অর্পণ করে। ১৮৪৯ সালে এটি ইয়েমেন আয়ালেতের অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৮৫৪ সালে মালয়ের লেখক আবদুল্লাহ বিন আবদুল কাদির তার ভ্রমণকাহিনীতে আল হুদায়দাহের বিবরণ দিয়েছেন, যেখানে কাথ চিবানোর প্রথা বর্ণিত আছে। ১৯শ শতাব্দীতে এটি একটি বৃহৎ দাস বিক্রয়কেন্দ্র ছিলো, যেখানে আধুনিক ইথিওপিয়ার ওরোমিয়া অঞ্চল থেকে দাসদের আনা হতো। আল হুদায়দাহের জলবায়ু উষ্ণ মরু জলবায়ু।

লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত এই বন্দর থেকে কফি, তুলা, চামড়া, খেজুর প্রভৃতি রপ্তানি করা হয়। অটোমানরা ১৯শ শতকে এর উন্নয়ন ঘটায়। ২০১৮ সালে ইয়েমেনের চার তৃতীয়াংশ মনুষ্য পরিবাহী ও বাণিজ্যিক জাহাজ এই বন্দর ব্যবহার করতো। এটি ইয়েমেনে মানবিক সহায়তা প্রবেশের প্রধান পথ এবং ৭০ শতাংশ বাণিজ্যিক পণ্য আমদানির জন্য ব্যবহৃত হয়। রাস ইশা বন্দর আল হুদায়দাহ শহরের সামান্য উত্তরে অবস্থিত।

ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধের সময় আল হুদায়দাহ বন্দরের গুরুত্ব বহুবার ব্যাহত হয়েছে। ২০২৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের সমর্থনে সরকারী বাহিনী হুথিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আল হুদায়দাহ বন্দর দখলের চেষ্টা করে। জাতিসংঘ বন্দরটি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হুথিদের সাথে চুক্তি করার চেষ্টা করে, যা ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর সফল হয়, যখন যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হয়।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েল হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে হোদেইদাহ বন্দরসহ ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। ইসরায়েলি বিমান হামলার ফলে হোদেইদাহ বন্দরে ও অন্যান্য স্থানে ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং মানুষের মৃত্যু হয়। হোদেইদাহ বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা মানবিক সহায়তা ও খাদ্য সরবরাহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মূল তথ্যাবলী:

  • ইয়েমেনের চতুর্থ বৃহত্তম শহর
  • লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর
  • মানবিক সাহায্যের প্রধান প্রবেশদ্বার
  • ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
  • ২০২৪ সালে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।