বিখ্যাত ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার হেনরি ব্লোফিল্ডের ৪৫ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘটনাটি ব্রিটিশ ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। লর্ডসের গ্যালারিতে তাঁর বিদায় অনুষ্ঠানে দীর্ঘ করতালি, তাঁর দীর্ঘ ও সম্মানিত ক্যারিয়ারের প্রতিফলন। সত্তরের দশক থেকে শুরু করে তিনি তিন দশক ধরে ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে তাঁর জাদুকরি কণ্ঠস্বর এবং অসাধারণ বিশ্লেষণ ক্ষমতা দিয়ে টেস্ট ম্যাচের চিত্র উপস্থাপন করেছেন। বিবিসি রেডিওর টিএমএস (Test Match Special) অনুষ্ঠানে তাঁর অবদান অতুলনীয়। তিনি শারজায় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের নিয়মিত ধারাভাষ্যকার ছিলেন। তাঁর ‘নাইস ইয়ারিং’ বাক্যটি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন ছিল ব্লোফিল্ডের, কিন্তু এলটন কলেজে পড়াকালীন একটি সাইকেল দুর্ঘটনায় ২৮ দিন কোমায় থাকতে হয় তাঁকে। এলটন কলেজে তাঁর বাবা টমাস রবার্টও পড়তেন। উল্লেখ্য, টমাস রবার্ট ইয়ান ফ্লেমিংয়ের ‘জেমস বন্ড’ উপন্যাসের খলনায়ক ‘আর্নেস্ট স্টাভ্রো ব্লোফেল্ড’ চরিত্রের প্রশংসক ছিলেন, এবং সেই নাম অনুসরণ করে নিজের নাম ব্লোফেল্ড রাখেন।
ক্রিকেটার হতে না পারলেও, তিনি ব্যাংকে তিন বছর চাকরি করার পর ষাটের দশকে ক্রিকেট ধারাভাষ্য শুরু করেন। রেডিও ছাড়াও টেলিভিশনে কাজ করেন, পত্রিকায় লেখা এবং ক্রিকেট নিয়ে বইও লিখেছেন। ৭৮ বছর বয়সে বয়সজনিত কারণে ধারাভাষ্য থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে ধারাভাষ্য দিয়ে তিনি তাঁর বিদায় ঘোষণা করেন। অবসরের পরও তিনি লেখক হিসেবে ক্রিকেট প্রেমীদের কাছে স্মরণীয় থাকবেন। তাঁর ‘ওভার অ্যান্ড আউট’ নামের বইটি পরবর্তীতে প্রকাশিত হয়।