হুতি বিদ্রোহী

আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১:০৭ পিএম

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ইতিহাস, কার্যকলাপ ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন:

হুতিরা কারা?

ইয়েমেনে ১৯৯০-এর দশকে উদ্ভূত হুতি (হুসি) আন্দোলন একটি শিয়া ইসলামপন্থী রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন। এদের আনুষ্ঠানিক নাম আনসারুল্লাহ (আল্লাহর সমর্থক)। এরা প্রধানত যায়দি শিয়াদের নিয়ে গঠিত, এবং তাদের নাম নেতৃত্বদানকারী হুতি (হুসি) গোত্রদের থেকে এসেছে। হুসেইন আল-হুতি ছিলেন আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।

উত্থান ও প্রাথমিক লক্ষ্য:

উত্তর ইয়েমেনের সাদা শহরে হুতি আন্দোলনের জন্ম। প্রথমদিকে ধর্মীয় পুনরুজ্জীবন আন্দোলন হিসেবে শুরু হলেও, পরবর্তীতে ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি আলী আবদুল্লাহ সালেহের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সৌদি আরব ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মদদপুষ্ট হওয়ার অভিযোগ এনে বিদ্রোহ শুরু করে। ২০০৩ সালে লেবাননের হিজবুল্লাহ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইহুদিদের বিরুদ্ধে তাদের সাংগঠনিক স্লোগান গ্রহণ করে। ২০০৪ সালে সাদায় ইয়েমেনের সামরিক বাহিনী হুসেইন আল-হুতিকে হত্যা করে। তার মৃত্যুর পর তার ভাই আব্দুল মালিক আল-হুসি আন্দোলনের নেতৃত্ব নেন।

২০১১ সালের ইয়েমেনি বিপ্লব ও পরবর্তী ঘটনা:

২০১১ সালের ইয়েমেনি বিপ্লবে অংশ নিয়ে হুতিরা রাষ্ট্রপতি আলী আব্দুল্লাহ সালেহের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে সমর্থন করে। পরে সালেহ পদত্যাগ করলেও, হুতিরা উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) শর্ত প্রত্যাখ্যান করে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে আলি আবদুল্লাহ সালেহের সাথে মিলিত হয়ে রাজধানী সানা এবং উত্তরের বেশিরভাগ অংশ দখল করে। ২০১৪-২০১৫ সালে সানায় সরকার দখল করে আবরাব্বুহ মনসুর হাদির সরকারের পতনের ঘোষণা দেয়।

সৌদি নেতৃত্বাধীন হস্তক্ষেপ ও বর্তমান পরিস্থিতি:

২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের মুখোমুখি হচ্ছে হুতিরা। এই যুদ্ধ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেনি সরকারকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে চালানো হচ্ছে। হুতিরা সৌদি শহরগুলোতে বারবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই সংঘাতকে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। সাম্প্রতিককালে লোহিত সাগরে পণ্য পরিবহনকারী জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।

হুতিদের লক্ষ্য:

হুতিরা ইয়েমেনের অর্থনৈতিক অনুন্নয়ন এবং রাজনৈতিক প্রান্তিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করা, দেশের হুসি-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলির জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসন, এবং ইয়েমেনে আরও গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য পোষণ করে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:

হুতিদের কার্যকলাপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশ হুতিদের হামলা বন্ধ করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

মূল তথ্যাবলী:

  • ১৯৯০-এর দশকে ইয়েমেনে উদ্ভূত হুতি আন্দোলন একটি শিয়া ইসলামপন্থী রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন
  • হুসেইন আল-হুতি ছিলেন আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা
  • ২০১৪-২০১৫ সালে সানায় সরকার দখল করে
  • ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের মুখোমুখি
  • লোহিত সাগরে পণ্য পরিবহনকারী জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - হুতি বিদ্রোহী

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:০০ এএম

ইসরায়েলের তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

১২/২৪/২০২৪

ইসরায়েলের উপর হামলা চালিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত করেছে।

হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসরায়েল হুতি বিদ্রোহীদের নেতৃত্বকেও হত্যার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

হুতি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের সানা বিমানবন্দর নিয়ন্ত্রণ করছে।