হাজারীবাগ গজমহল: ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও বর্তমান বাস্তবতা
ঢাকা মহানগরীর হাজারীবাগ থানার অন্তর্গত গজমহল, পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। একসময় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হলেও, ট্যানারিগুলো সাভারে স্থানান্তরের পর গজমহলের চেহারা বদলে গেছে। তবে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও বর্তমান বাস্তবতা একসাথে বিবেচনা করলে, গজমহলের একটি অনন্য পরিচয় দেখা যায়।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: হাজারীবাগের বিভিন্ন মহল্লার মধ্যে গজমহল অন্যতম। এই এলাকায় বহু প্রজন্ম ধরে মানুষ বসবাস করে আসছে, তাদের জীবনে চামড়া শিল্পের অবদান ছিল অপরিসীম। গজমহল ট্যানারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ এলাকার সামাজিক-ঐতিহাসিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। গজমহলের জমি এলাকার ঐতিহ্যের সাক্ষী, প্রজন্ম পরম্পরায় এই জমি এদের পূর্বপুরুষদের অর্জিত সম্পদ।
বর্তমান বাস্তবতা ও রাজউকের অধিগ্রহণ পরিকল্পনা: সম্প্রতি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) হাজারীবাগের গজমহল ও শিকারিটোলা মৌজার জমি অধিগ্রহণের পরিকল্পনা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বাসিন্দারা জীবনের বিনিময়ে হলেও তাদের বসতভিটা রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করার নীতির সাথে রাজউকের এই পদক্ষেপের সাংঘর্ষিকতা তুলে ধরেছেন। ১৩ সদস্যের বসতভিটা মালিক ঐক্য পরিষদ গঠন করে তারা অধিগ্রহণ প্রতিরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা: গজমহল হাজারীবাগের অন্যতম প্রধান এলাকা। এটি বুড়িগঙ্গা নদীর কাছে অবস্থিত। এখানকার জনসংখ্যা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মিশ্রণে গঠিত।
অর্থনৈতিক কার্যকলাপ: পূর্বে চামড়া শিল্পের উপর নির্ভরশীল গজমহল বর্তমানে বিভিন্ন ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের আধার।
গজমহলের ভাবিষ্যৎ: রাজউকের অধিগ্রহণ পরিকল্পনা গজমহলের ভাবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বাসিন্দাদের সংগ্রাম এবং সরকারের উপযুক্ত পদক্ষেপ এই এলাকার ভাবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।