হাওয়া: রহস্য, রোমাঞ্চ আর সমুদ্রের গভীরে লুকানো কাহিনী
২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হাওয়া’ বাংলাদেশী চলচ্চিত্র জগতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালনায় নির্মিত এই রহস্য-নাট্যধর্মী চলচ্চিত্রটি দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ‘হাওয়া’ শব্দটির বহুবিধ অর্থের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, চলচ্চিত্রটি একই সাথে রোমাঞ্চ, রহস্য, আর নারীর প্রতিশোধের গল্প তুলে ধরেছে।
কাহিনী: গল্পটি ঘুরেফিরে আটজন জেলের ট্রলারে সমুদ্রে মাছ ধরার সময় এক রহস্যময়ী মেয়েকে উদ্ধার করা ঘটনার চারপাশে। মেয়েটির আগমনের পর ট্রলারে একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। জেলেদের জালে মাছ ওঠে না, এবং তারা গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মেয়েটির রহস্য ও তার প্রতিশোধ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। এই রহস্যের বীজ রোপণ করা হয়েছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোককাহিনী ও রূপকথার উপর।
চরিত্র: চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরীফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল মণ্ডল ও রিজভী রিজু-সহ আরও অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। চঞ্চল চৌধুরী ‘চান মাঝি’ চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য বিশেষ প্রশংসা লাভ করেছেন।
চিত্রগ্রহণ: বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। সুন্দর চিত্রায়ন, সঙ্গীত আর অভিনয় চলচ্চিত্রটির একটি মূল বৈশিষ্ট্য। ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি দেশজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
মুক্তি ও সাফল্য: ‘হাওয়া’ ২০২২ সালের ২৯ জুলাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং বক্স অফিসে বিরাট সাফল্য অর্জন করে। এটি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র পুরস্কারে মনোনয়ন ও পুরস্কার অর্জন করে।
বিশেষ তথ্য: চলচ্চিত্রটি মুক্তির পর বিভিন্ন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন উল্লঙ্ঘনের অভিযোগ। তবে এই অভিযোগ পরিচালক খণ্ডন করেছেন।
‘হাওয়া’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি কাহিনী যা দর্শকদের মনে স্থান পেয়ে থাকবে অনেক দিন ধরে। এই চলচ্চিত্র অনন্য চিত্রগ্রহণ, রোমাঞ্চকর কাহিনী এবং অভিনয়শিল্পীদের অসাধারণ অভিনয়ের কারণে দর্শক প্রশংসা লাভ করেছে।