হরিরামপুর উপজেলা, মানিকগঞ্জ
বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা হল হরিরামপুর। এটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল। পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় এটি জেলাটির অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
ভৌগোলিক অবস্থান ও সীমানা:
হরিরামপুর উপজেলার উত্তরে শিবালয় উপজেলা, ঘিওর উপজেলা এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা; দক্ষিণে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলা ও ফরিদপুর সদর উপজেলা; পূর্বে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলা ও দোহার উপজেলা; এবং পশ্চিমে শিবালয় উপজেলা, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলা ও ফরিদপুর সদর উপজেলা অবস্থিত। পদ্মা নদী হরিরামপুর ও ফরিদপুরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে।
জনসংখ্যা ও জনসংখ্যার ঘনত্ব:
প্রায় ১,৩৯,৩১৮ জন মানুষ হরিরামপুর উপজেলায় বাস করে। পুরুষের সংখ্যা প্রায় ৬৫,৮১৫ জন এবং মহিলার সংখ্যা প্রায় ৭৩,৫০৩ জন। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৬৯৮ জনের বসবাস।
প্রশাসনিক বিভাগ:
হরিরামপুর থানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৪৫ সালে এবং ১৯৮৩ সালে এটি উপজেলায় রূপান্তরিত হয়। উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন, প্রায় ২৫০টি গ্রাম এবং ১৬৩টি মৌজা রয়েছে।
অর্থনীতি:
হরিরামপুরের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, গম, সরিষা, পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম এর প্রধান কৃষি ফসল। মৎস্য চাষ, গবাদিপশু পালন এবং হাঁস-মুরগী পালন ও উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
উপজেলায় সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। শিক্ষার হার প্রায় ৪৮.৮%। স্বাস্থ্য সেবার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
মুক্তিযুদ্ধের সময় হরিরামপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ১৯৭১ সালে এই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের লড়াই ছিল। ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং প্রত্নসম্পদ এখানে রয়েছে যেমন লোকমানিয়া দরগাহ (ঝিটকা), মুসা খাঁ’র দুর্গ (যাত্রাপুর)।
যোগাযোগ:
উপজেলায় পাকা, অর্ধ-পাকা ও কাঁচা রাস্তা সহ যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে। নদীপথ ও ব্যবহৃত হয়।
উপসংহার:
হরিরামপুর মানিকগঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা যা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্ব দিয়ে পরিচিত। আমরা আশা করি ভবিষ্যতে এই উপজেলার উন্নয়ন এবং অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে।