হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলা

আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬:৪৭ পিএম

হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলা: মানিকগঞ্জ জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হল হরিরামপুর ও শিবালয়। পদ্মা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী এই দুটি উপজেলা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভৌগোলিক দিক থেকে সমৃদ্ধ। দুটি উপজেলারই নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জনজীবন রয়েছে।

ভৌগোলিক অবস্থান ও আয়তন:

  • হরিরামপুর: মানিকগঞ্জ জেলার উত্তরে অবস্থিত এই উপজেলার আয়তন প্রায় ২৪৪.৩০ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে শিবালয়, ঘিওর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে চরভদ্রাসন ও ফরিদপুর সদর উপজেলা, পূর্বে মানিকগঞ্জ সদর, নবাবগঞ্জ (ঢাকা) ও দোহার উপজেলা এবং পশ্চিমে শিবালয়, গোয়ালন্দঘাট ও ফরিদপুর সদর উপজেলা অবস্থিত।
  • শিবালয়: মানিকগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এই উপজেলার আয়তন প্রায় ১৯৯.১৮ বর্গ কিলোমিটার। এর উত্তরে দৌলতপুর ও ঘিওর উপজেলা, দক্ষিণে হরিরামপুর ও গোয়ালন্দ উপজেলা, পূর্বে ঘিওর ও হরিরামপুর উপজেলা এবং পশ্চিমে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলা অবস্থিত।

জনসংখ্যা ও জনগোষ্ঠী:

  • হরিরামপুরের জনসংখ্যা প্রায় ১,৩৯,৩১৮ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৬৫,৮১৫ জন ও মহিলা ৭৩,৫০৩ জন। মুসলিম ১২৩,১৯৪ জন, হিন্দু ১৬,১০৫ জন, এবং অতি সামান্য খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
  • শিবালয়ের জনসংখ্যা প্রায় ১,৭১,৮৭৩ জন, যার মধ্যে পুরুষ ৮৫,২১৬ জন ও মহিলা ৮৬,৬৫৭ জন। মুসলিম ১৪৯,৫০০ জন, হিন্দু ২২,০৪৫ জন, খ্রিস্টান ২৬৪ জন ও অন্যান্য ৬৪ জন।

ঐতিহাসিক ঘটনা ও প্রত্নসম্পদ:

  • হরিরামপুর: লোকমানিয়া দরগাহ (ঝিটকা), মুসা খাঁ’র দুর্গ (যাত্রাপুর) উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক স্থাপনা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সুতালড়ি ও হরিণায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের লড়াই হয়েছিল।
  • শিবালয়: একডালা দুর্গ (আমডালা), কাটাসগড় দুর্গ, ঢাকীজোড়ার দুর্গ, দাসচিরা বৌদ্ধবিহার ও স্তূপ, নবরত্ন মঠ (তেওতা), তেওতা জমিদার বাড়ি, মাচাইন মসজিদ, শাহ রুস্তমের মাযার (মাচাইন) ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থাপনা এই উপজেলার সমৃদ্ধ ইতিহাসের সাক্ষী। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নয়াবাড়ি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের উপর পাকসেনাদের আক্রমণ হয়েছিল।

অর্থনীতি ও কৃষি:

দুটি উপজেলার অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। ধান, পাট, গম, সরিষা, পিঁয়াজ, রসুন, চীনাবাদাম হরিরামপুরের প্রধান ফসল। শিবালয়ে ধান, গম, পাট, আলু, ডাল, চীনাবাদাম, আখ, তৈলবীজ, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ ও শাকসবজি চাষ হয়। মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালনও উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:

দুটি উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। হরিরামপুরে কলেজ, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা আছে। শিবালয় ও একই ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা উন্নয়নের চেষ্টা চলছে।

যোগাযোগ:

দুটি উপজেলাতেই পাকা ও কাঁচা রাস্তার জাল বিদ্যমান। নদীপথ যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

মূল তথ্যাবলী:

  • হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলা মানিকগঞ্জ জেলার অধীনে
  • পদ্মা ও যমুনা নদীর তীরবর্তী অবস্থান
  • কৃষি-নির্ভর অর্থনীতি
  • ঐতিহাসিক স্থাপনা ও প্রত্নসম্পদ সমৃদ্ধ
  • মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে জড়িত
  • শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের চেষ্টা

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।

গণমাধ্যমে - হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলা

হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলায় সবচেয়ে বেশি হালি পেঁয়াজের চাষ করা হয়।