বাংলাদেশের সড়ক উন্নয়ন: একটি ব্যাপক পর্যালোচনা
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের সামগ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নের অন্যতম প্রধান অংশ হিসেবে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে সরকারের নানা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই প্রবন্ধে বাংলাদেশের সড়ক উন্নয়নের ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
ইতিহাস:
১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের পর পূর্ব পাকিস্তানে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। গণপূর্ত বিভাগ, জেলা বোর্ড এবং ইউনিয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সড়ক, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ পরিচালিত হতো। ১৯৬২ সালে 'যোগাযোগ ও পূর্ত' (C & B) বিভাগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর গঠিত হয়। স্বাধীনতার পর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন ও উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করেন। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
বর্তমান অবস্থা:
বর্তমানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ দেশের সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) জাতীয়, আঞ্চলিক ও জেলা সড়কের নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে। তবে, বর্তমানে অনেক প্রকল্পের কাজে বিলম্ব হচ্ছে। বন্যা, ঠিকাদারদের অনুপস্থিতি, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং অর্থনৈতিক কারণে প্রকল্পের কাজ সময়মতো সম্পন্ন করা কঠিন হচ্ছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ১৩৪টি প্রকল্পের জন্য ৩২,০৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অনেক প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। নতুন সড়ক, সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ, বর্তমান সড়কের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিদেশী সরকারের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। তবে, সুশাসন ও দুর্নীতির বিষয়টি সামনে রেখে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্যযোগ্য তথ্য:
- সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) দেশের প্রধান সড়ক উন্নয়নকারী সংস্থা।
- অনেক সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বিদেশী সাহায্যের উপর নির্ভরশীল।
- বন্যা, ঠিকাদারি সংকট এবং অর্থনৈতিক প্রভাব সড়ক উন্নয়ন কাজে প্রভাব ফেলে।
- সুশাসন ও দুর্নীতির বিষয়টি সড়ক উন্নয়ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ।