স্ত্রী

স্ত্রী: পরিচয়, অধিকার ও সমাজে ভূমিকা

একজন স্ত্রী হলেন বৈবাহিক সম্পর্কের নারী অংশীদার। এই সংজ্ঞাটি আইনসম্মত বিবাহবিচ্ছেদ বা সঙ্গীর মৃত্যুর পরে আর প্রযোজ্য হয় না। সঙ্গীর মৃত্যুর পর তাকে বিধবা বলা হয়, তবে তালাকের পর নয়। স্ত্রীর অধিকার ও দায়িত্ব সঙ্গী, সমাজ ও সংস্কৃতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয় এবং কালের সাথে সাথে তারও পরিবর্তন ঘটে।

  • *শব্দের উৎপত্তি:** "স্ত্রী" শব্দটি জার্মান উৎসের, প্রোটো-জার্মানিক * wibam, "woman" থেকে এসেছে। এর আদি অর্থ ছিল কেবল "নারী", বিবাহের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়।
  • *বিবাহিত নারীর পরিচয়:** অনেক সংস্কৃতিতে বিবাহের পরে নারী স্বামীর উপাধি গ্রহণ করে, যদিও এটি সর্বজনীন নয়। বিবাহিত নারী বিভিন্ন উপায়ে তাঁদের বৈবাহিক অবস্থা প্রকাশ করেন, যেমন- বিবাহের আংটি। তাকে সাধারণত "মিসেস" উপাধি দেওয়া হয়, তবে কিছু নারী "মিজ" ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। বিয়ের দিন তাকে কনে বলা হয়, বিয়ের পর স্ত্রী।
  • *ঐতিহাসিক ও আইনি দিক:** উনিশ শতক থেকেই স্ত্রীর আইনগত অধিকার নিয়ে আলোচনা চলে আসছে। জন স্টুয়ার্ট মিল "The Subjection of Women" (1869) গ্রন্থে এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। ঐতিহাসিকভাবে, অনেক সমাজে স্বামীর অধিকার বেশি ছিল। বিংশ শতাব্দীতে অনেক দেশে লিঙ্গ নিরপেক্ষ আইন প্রবর্তন করে এই অসমতা কমেছে। তবে বিশ্বের অনেক স্থানে স্বামীর কর্তৃত্ব এখনও বিদ্যমান।
  • *যৌতুক, দেনমোহর ও কনের দাম:** ঐতিহ্যগতভাবে ও এখনও কিছু সংস্কৃতিতে যৌতুক, দেনমোহর ও কনের দামের প্রথা বিদ্যমান। এই প্রথাগুলি কখনো কখনো মৃত্যু ও সহিংসতার কারণ হয়।
  • *নাম পরিবর্তন:** কিছু সংস্কৃতিতে স্ত্রী বিবাহের পর স্বামীর নাম গ্রহণ করে। এটি বিতর্কিত, কেউ কেউ একে বৈষম্যমূলক বলে মনে করেন।
  • *মাতৃত্ব:** প্রথাগতভাবে স্ত্রীর ভূমিকা ঘনিষ্ঠভাবে মাতৃত্বের সাথে জড়িত। কিন্তু আধুনিক সময়ে বিয়ের বাইরে সন্তান জন্মদান স্বাভাবিক। সন্তান নেওয়ার ব্যাপারে নারীর ইচ্ছা সর্বত্র সমানভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
  • *প্রাচীন রোম ও খ্রিস্টধর্ম:** প্রাচীন রোমে অগাস্টাস সম্রাট বিবাহ আইন প্রবর্তন করেছিলেন। খ্রিস্টধর্মে বিবাহ সম্পর্কে নিউ টেস্টামেন্টের দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। মধ্যযুগে বিবাহবিচ্ছেদ অস্বাভাবিক ছিল।
  • *প্রাক-আধুনিক পশ্চিমে স্ত্রীর অধিকার:** প্রাক-আধুনিক পশ্চিমে স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকার অঞ্চলভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ইংরেজি সাধারণ আইনের অধীনে স্ত্রীর সম্পত্তি স্বামীর নিয়ন্ত্রণে ছিল।
  • *আধুনিক পশ্চিমে পরিবর্তন:** বিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমে স্ত্রীর ভূমিকা দুটি প্রধান উপায়ে পরিবর্তিত হয়েছে: (১) সংঘবদ্ধ বিবাহের প্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছেদ এবং (২) মধ্য ও উচ্চ-শ্রেণির পারিবারিক জীবনের আমূল পরিবর্তন।
  • *বিভিন্ন ধর্মে স্ত্রীর অধিকার ও দায়িত্ব:** হিন্দু, ইসলাম, ইহুদি ধর্মে স্ত্রীর বিভিন্ন অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে। চীন ও জাপানে ঐতিহাসিকভাবে স্ত্রীর অধিকার কম ছিল, কিন্তু আধুনিক আইনে পরিবর্তন এসেছে।
  • *ব্যভিচার:** স্ত্রীর অন্য পুরুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকে ব্যভিচার বলা হয়। ঐতিহাসিকভাবে, এটি একটি গুরুতর অপরাধ ছিল এবং এখনো কিছু স্থানে গুরুতর ফলাফল হতে পারে।

এই নিবন্ধে স্ত্রীর ভূমিকা, অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক, আইনগত ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে।

মূল তথ্যাবলী:

  • স্ত্রী হলেন বৈবাহিক সম্পর্কের নারী অংশীদার।
  • স্ত্রীর অধিকার ও দায়িত্ব সঙ্গী, সমাজ ও সংস্কৃতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
  • ঐতিহাসিকভাবে স্বামীর অধিকার বেশি ছিল, কিন্তু আধুনিক আইনে পরিবর্তন এসেছে।
  • বিভিন্ন সংস্কৃতিতে যৌতুক, দেনমোহর ও কনের দামের প্রথা বিদ্যমান।
  • বিবাহের পরে নাম পরিবর্তন একটি বিতর্কিত বিষয়।
  • স্ত্রীর ভূমিকা মাতৃত্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
  • বিভিন্ন ধর্মে স্ত্রীর অধিকার ও দায়িত্ব ভিন্ন।
  • ব্যভিচার একটি গুরুতর অপরাধ।

গণমাধ্যমে - স্ত্রী

২০ ডিসেম্বর ২০২৪

তিনি তার স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে করেছেন।