সারা হোসেন

আপডেট: ১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮:০০ এএম
নামান্তরে:
Sara Hossain
সারা হোসেন

বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী হলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। ১৯৬৩ সালে জন্মগ্রহণকারী সারা হোসেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেন। তার কর্মজীবনের ৭০% সময় ব্যয়িত হয় জনস্বার্থ ও মানবাধিকার সংক্রান্ত মামলা পরিচালনায়। তিনি বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামী ফতোয়ার নামে নারীদের ওপর অত্যাচারের তীব্র বিরোধী সারা হোসেন।

২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি তাকে 'আন্তর্জাতিক সাহসী নারী' পুরষ্কার প্রদান করেন। তিনি ২০১০ সালে নারীর প্রতি সহিংসতা নিরোধে বাংলাদেশের প্রথম বিস্তৃত আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন (Domestic Violence (Prevention and Protection) Act ২০১০)। ফতোয়া সহিংসতা মোকাবেলায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ধর্ষণ ও যৌন হামলার মামলায় 'দুই আঙুল পরীক্ষা' পদ্ধতির বিরোধী। লিন ওয়েলচম্যানের সাথে তিনি 'সম্মান: মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ, দৃষ্টান্ত এবং সহিংসতা' গ্রন্থ সম্পাদনা করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে লন্ডন-গামী একটি ফ্লাইটে সারা হোসেনের কিশোরী অবস্থায় সহযাত্রী হওয়ার বর্ণনাও রয়েছে।

সারা হোসেন বরিশালের শায়েস্তাবাদের একটি সম্ভ্রান্ত বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ড. কামাল হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম আইনমন্ত্রী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, এবং তার মাতা হামিদা হোসেন একজন মানবাধিকার কর্মী ও শিক্ষাবিদ। সারা ১৯৮৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৮৯ সালে অনারেবল সোসাইটি অফ মিডল টেম্পল থেকে ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল সনদ পান। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ও ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত হন।

১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ইন্টারাইটস সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিওতে আইন কর্মকর্তা হিসাবে কাজ করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতে মানবাধিকার মামলায় তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড এসোসিয়েটস আইন প্রতিষ্ঠানের একজন অংশীদার।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের তদন্তে তিনি সভাপতি নিযুক্ত হন। ঢাকা ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা আইন-ও-সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটিতে তিনি সদস্য। তিনি দক্ষিণ এশিয়া মহিলা তহবিলের (এসএইচএফ) পূর্ববর্তী বোর্ড সদস্য ও আন্তর্জাতিক আইন কমিশন (আইসিজে) এর কমিশনার ছিলেন। আন্তর্জাতিক আইন সমিতি (আইএলএ) এর মানবাধিকার কমিটি এবং জেন্ডার জাস্টিস অন উইমেন ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশনের (ডব্লিউআইসিজি) উপদেষ্টা কমিটিতে সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

সারা হোসেন ব্রিটিশ মানবাধিকার কর্মী ডেভিড বার্গম্যানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। তিনি ২০০৮ সালে ‘ইয়ং গ্লোবাল লিডার’ ও ২০০৭ সালে ‘এশিয়া ২১ ফেলো’ হিসাবেও সম্মানিত হন। ২০০৫ সালে 'অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার' ও 'হিউম্যান রাইটস আইনজীবী পুরস্কার' লাভ করেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার অঙ্গনে সারা হোসেন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।

মূল তথ্যাবলী:

  • ব্যারিস্টার সারা হোসেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ওকালতি করেন।
  • তিনি বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এর অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক।
  • ২০১৬ সালে তিনি 'আন্তর্জাতিক সাহসী নারী' পুরষ্কার লাভ করেন।
  • তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা বিরোধী আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
  • তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তদন্ত কমিশনেও দায়িত্ব পালন করেন।

একই নামে একাধিক ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও স্থান থাকতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে জানতে সংবাদ লিংকে প্রবেশ করুন।