দুই সাজ্জাদ আলী: একজন মুক্তিযোদ্ধা, অন্যজন পুলিশ কমিশনার
এই নিবন্ধে আমরা দুইজন সাজ্জাদ আলীর কথা বলবো, যাদের নামের মিল থাকলেও ব্যক্তিগত পরিচয় ও পেশাগত জীবন সম্পূর্ণ আলাদা।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫১ সালের ১১ই এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার চৌসই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কাজী আব্দুল মুত্তালিব এবং মাতা কাজী নূরুন্নাহার বেগম। ১৯৬৯ সালের শেষের দিকে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি সিলেট অঞ্চলে ৪ নম্বর সেক্টরের অধীনে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীকে সংগঠিত করেন এবং রওশন আরা ব্যাটারির সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাব প্রদান করে। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাকে গণ-বিষয়ক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা ও লেখনীর মাধ্যমে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি প্রায় ৫৪টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেছেন, যার মধ্যে পাঁচজন বীরশ্রেষ্ঠের জীবনী উল্লেখযোগ্য।
শেখ সাজ্জাদ আলী: বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তা, যিনি ২০২৪ সালের ২০শে নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর ৩৮তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার জন্ম ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলায়। তিনি ১৯৮৪ সালে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করেন এবং কর্মজীবনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার, লক্ষ্মীপুর জেলার পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি এবং অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এক সময় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি চাকরি হারান, পরে আদালতের নির্দেশে চাকরিতে পুনর্বহাল হন।
উল্লেখ্য যে, এই দুই ব্যক্তির নামের মিল থাকলেও, তাদের জীবনী ও কাজ সম্পূর্ণ আলাদা।
দুই সাজ্জাদ আলীর জীবনী সংক্ষেপে:
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির: মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীরপ্রতীক খেতাব প্রাপ্ত, পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত, ৫৪ টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
শেখ সাজ্জাদ আলী: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বিসিএস পুলিশ ক্যাডার, দীর্ঘ পুলিশ কর্মজীবন।