বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাগণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য:
১৯৯১ সালে সংবিধানের ১৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। এই ব্যবস্থার অধীনে, একটি নির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ৯০ দিনের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হতো। এই সরকারের প্রধান হলেন প্রধান উপদেষ্টা, যিনি সাধারণত সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হতেন। তার অধীনে আরও দশজন উপদেষ্টা থাকতেন। তাদের নির্বাচন করা হতো রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের মধ্য থেকে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল নির্বাচন পরিচালনা করা। প্রধান উপদেষ্টার নির্বাহী ক্ষমতা ছিল একজন নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার সমতুল্য। তবে, কিছু সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা ছিল।
এই ব্যবস্থা বেশ কিছু বিতর্কের মুখোমুখি হয়। ২০০৬-০৮ সালের রাজনৈতিক সংকটের সময়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর, নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এই সরকারে ১৭ জন উপদেষ্টা ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তি, যেমন সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। তারা ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণ করেন। ড. ইউনূস ২৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব নেন।
সুতরাং, "সরকারের উপদেষ্টা" বলতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ব্যক্তিদের বোঝানো হতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে একটি নির্দিষ্ট প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা থাকতেন; এবং ২০২৪ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। সংজ্ঞা স্পষ্ট করার জন্য প্রসঙ্গ নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।